ব্যবসায় কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে পবিত্র কোরআন শরীফ ছুঁয়ে শপথ করে একটি প্রতারক চক্র। চক্রটি ভুক্তভোগীকে খুব খাতির-যত্নে আপ্যায়ন করায়। পরে একটি ক্লিনিক ব্যবসায় অতি অল্প সময়ে অধিক লাভের কথা বলে এক কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে প্রলুদ্ধ করে এবং এ সময় কোরআন শরীফ ছুঁয়ে শপথ করে।
শনিবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
এর আগে অভিনব কৌশলে প্রতারণার ফাঁদ পেতে টাকা আত্মসাৎকারী চক্রের মূল হোতাসহ পাঁচজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল। শুক্রবার রাজধানীর মিরপুর এবং উত্তরা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন- মো. কবির ওরফে মিজান উকিল, মোর পিন্টু খান, মো. সাইফুল ইসলাম, কেনা রহমান ও সাদিয়া ইসলাম মৌ। এ সময়ে তাদের কাছ থেকে ব্রিফকেস, লাগেজ, ৩৬টি টাকা সাদৃশ্য বান্ডেল, ১২টি মোবাইল ফোন এবং ২০টি মোবাইল সিম উদ্ধার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ডিবি প্রধান বলেন, গত ২০ অক্টোবর ভুক্তভোগী মো. মুর রহমান নামে এক ব্যক্তি বগুড়ার গ্রামের বাড়িতে বিল্ডিং নির্মাণের সময়ে প্রতারক দলের দুই সদস্য তার কাছে এসে ভালো মানের জমি জোগাড় করে দেয়ার অনুরোধ করে। কথাবার্তার একপর্যায়ে তারা জানায় একজন শিল্পপতি, ঢাকায় তার বিশাল সম্পদসহ নয়টি বাড়ি, একটি ক্লিনিক, মিল-ফ্যাক্টরি আছে। তার বস একটি ভালো মানের ক্লিনিক নির্মাণ করতে চায়। এ বিষয়ে প্রতারকের বসসহ তাকে সাহায্য করতে বারবার অনুরোধ করে মুর রহমানের মোবাইল নম্বর নিয়ে ঢাকায় চলে যায়। পরবর্তীতে প্রতারকদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে মুরের একপর্যায়ে বন্ধুত্ব তৈরি হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ডিবি প্রধান বলেন, পরে মুর রহমান ঢাকায় আসেন। প্রতারকরা তাকে অতি খাতির-যত্নে আপ্যায়ন করে এবং ক্লিনিক ব্যবসায় অতি অল্প সময়ে অধিক লাভের কথা বলে এক কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে প্রলুদ্ধ করে কোরআন শরীফ ছুঁয়ে শপথ করে। ব্যবসায়ের চুক্তি মোতাবেক ভুক্তভোগী ২৩ অক্টোবর পাঁচ লাখ টাকা দেন। আর বাকি টাকা মুর রহমান তার আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে ঋণ করে প্রতারকদের হাতে তুলে দেন। পরবর্তীতে মুর রহমান প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করেন।
গ্রেপ্তার আসামিদের বরাত দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে হারুন অর রশীদ বলেন, প্রতারকরা পারস্পরিক যোগসাজসে ক্লিনিক, মোবাইল টাওয়ার, শিল্প-কারখানা স্থাপন, ব্যবসার নাম করে অভিনব কৌশলে প্রতারণার ফাঁদ পেতে টার্গেটকৃত ব্যক্তির টাকা আত্মসাৎ করে আসছে।