বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ হত্যায় তার বাবার মামলায় ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন আমাতুল্লাহ বুশরা নামে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী। এদিকে কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে ফারদিনের ‘প্রেমিকা’ হিসেবে আরিশা আশরাফ নামে আরেক তরুণীর নাম উঠে এসেছে।
সংবাদমাধ্যমে আসা এই খবরের প্রতিবাদ জানিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন আরিশা আশরাফ নামের ওই তরুণী। তার দাবি, তিনি বা আমাতুল্লাহ বুশরা কেউই ফারদিনের প্রেমিকা ছিলেন না।
আরিশা তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘আপনারা যারা মিডিয়ার ফেইক নিউজ শুনে নিজেদের মতো জাজমেন্ট দিয়ে দিচ্ছেন তারা সবাই দয়া করে শুনে রাখুন, মিডিয়ার করা অধিকাংশ নিউজই মিথ্যা। শুধু কিছু একটা লিখতে হবে দেখে তারা মনের মতো লিখে যাচ্ছে।’
আরিশার দাবি, ‘ফারদিন নূর আমাকে ঐ দিন ড্রপ করতে আসেনি। আমি আরিশা আশরাফ। আমি আমাতুল্লাহ্ বুশরা নই। আরটিভির মতো স্বনামধন্য একটা টিভি চ্যানেলসহ অন্যান্য সংবাদ মাধ্যমগুলোর এমন বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রচার করাটা আসলে মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা-এর মতো। তারা কতটা মাতালের মতো নিউজ বানাচ্ছে সেটার প্রমাণ আরিশা আর বুশরাকে মিক্স আপ করে ফেলা। সেই সংবাদের নিচের কমেন্টগুলো দেখলে একটা সুস্থ মানুষের পক্ষে শান্ত থাকা সম্ভব না।’
তরুণী লিখেছেন, ‘এই অংশটা দয়া করে একটু মনোযোগ দিয়ে পড়বেন। ফারদিন নূরের কোনো প্রেমিকা ছিল না। না আমি আর না বুশরা আমরা কেউই তার প্রেমিকা ছিলাম না। আমার ব্যাপারটা আমি পরের পোস্টে ক্লিয়ার করব, আগে বুশরারটা বলি। ফারদিন নূর যখন নিখোঁজ ছিল, তখন তার ল্যাপটপটা পুলিশ সিজ করার আগে তার ভাইয়েরা বুশরার সাথে তার ম্যাসেনজার কথোপকথন সম্পূর্ণ পড়েছে। যেখানে এমন কিছুই পাওয়া যায়নি যেটা বিন্দুমাত্র আপত্তিকর।’
আরিশা লিখেছেন, ‘সে (ফারদিন) আর ১০টা ছেলের মতো ছিলই না। এসব কখনোই তাকে স্পর্শ করতে পারেনি। এই জন্য তাকে রোবট নামে ডাকা হতো। নামটা Sudeepa Haldar এর দেওয়া। তার কথা বলার টপিকই ছিল বই অথবা ভালো কোনো মুভি অথবা ফিলোসোফিক্যাল কোনো আলোচনা। তার সবচেয়ে কাছের মানুষ সাজ্জাজ ভাইয়ার একটা পোস্টের লিংক দিয়ে দিব কমেন্টে, ঐটা পড়লে তার সম্পর্কে একটু আইডিয়া পাবেন।’
তরুণী জানান, ‘আমার সাথে তার (ফারদিন) কী সম্পর্ক সেটা আমি নেক্সট পোস্টে জানাবো।’ আরিশার অনুরোধ, দয়া করে একটা মৃত মানুষকে নিয়ে না জেনে তার ব্যাপারে উল্টাপাল্টা কথা রটাবেন না। তার পরিবারের কথাটা একটু ভাবুন। একটু সমমর্মি হোন, for God Sake.
প্রসঙ্গত, নিখোঁজের তিন দিন পর নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে গত ৭ নভেম্বর রাতে ফারদিনের লাশ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়। তার শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন খুঁজে পান চিকিৎসকরা। তা দেখে পুলিশ জানায়, ফারদিনকে হত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় গত ৯ নভেম্বর রাতে ফারদিনের বাবা নুর উদ্দিন রানা বাদী হয়ে রামপুরা থানায় মামলা করেন। মামলায় নিহতের ‘বান্ধবী’ বুশরাসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়। সেদিন রাতেই বুশরাকে রামপুরায় তার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তিনি পাঁচ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন।