নারীদের দিয়ে পাতা ফাঁদে পড়ে জীবন দিতে হয়েছে বগুড়ার অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য জাকির হোসেনকে (৪৫)। দুই নারীকে দিয়ে তাকে ডেকে নিয়ে জিম্মি করেছিল একটি চক্র। এরপর তার কাছ থেকে নগদ টাকা ছাড়াও বিকাশের মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া হয় আরো ১০ হাজার টাকা। সেখান থেকে পালাতে গেলে ছুরিকাঘাতে প্রাণ যায় জাকিরের।
ওই হত্যাকাণ্ডের পরপরই অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে বগুড়া পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। জিজ্ঞাসাবাদে তারা এমন তথ্যই দিয়েছে বলে জানান বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলী হায়দার চৌধুরী।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার কৈগাড়ী পূর্বপাড়ার মৃত মিলনের ছেলে আশরাফুল ইসলাম ওরফে আশা (২৪) এবং একই এলাকার শহিদুল ইসলাম খোকনের ছেলে মোস্তফা কামাল ওরফে কমল (২৫)। তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি চাকু উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গ্রেপ্তার দুজনসহ আটজনের একটি চক্র নারীদের দিয়ে ফাঁদ পেতে দীর্ঘদিন ধরেই ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় করছিল। তারা সেনাবাহিনী থেকে অবসরপ্রাপ্ত জাকির হেসেনকে টার্গেট করে। দুই নারীকে দিয়ে তার সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলে চক্রটি। তাদেরকে দিয়ে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় বগুড়া শহরের কৈগাড়ী জবানী স্কুলের পাশের একটি ভাড়া বাসায় ডেকে নেওয়া হয় জাকিরকে। কৌশলে তাকে একটি কক্ষে আটকে নগদ দুই হাজার ৩০০ টাকা এবং বিকাশের মাধ্যমে আরো ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় তারা। আরো টাকার জন্য তাকে চাপ দিলে জাকির কৌশলে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে গ্রেপ্তার আশা পেছন থেকে তাকে ছুরিকাঘাত করে। আহত অবস্থায় দৌড়ে পালানোর সময় রাস্তায় পড়ে যান জাকির। স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, ঘটনার পর নিহতের স্ত্রী মমতাজ বেগম বাদী হয়ে শাজাহানপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। লাশ ময়নাতদন্ত শেষে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।