স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করে এক সপ্তাহ আগে হবিগঞ্জ ছেড়েছেন রফিক নামের এক যুবক। বর্তমানে রাত কাটান সিলেটের হযরত শাহজালাল মাজার এলাকায়। চালিয়ে যাচ্ছেন কাজের সন্ধান। তবে শনিবার (১২ নভেম্বর) বিকালে সিলেট আলিয়া মাঠে গিয়েই বাঁধে বিপত্তি। এ মাঠে আগামী ১৯ নভেম্বর ‘গণসমাবেশ’র আয়োজন করতে যাচ্ছে বিএনপি।
জানা যায়, রফিকের সঙ্গে আছেন কামরুল ইসলাম নামের আরেক যুবক। তাদের মধ্যে রফিকের বাড়ি হবিগঞ্জের কালিঙ্গা গরমচরি ও কামরুলের বাড়ি হবিগঞ্জ সদর এলাকায়। দুজনই কাজের উদ্দেশ্যে সিলেট এসেছেন। প্রথমে সিলেট এসে রেল স্টেশন এলাকায় রাত কাটাতে চেষ্টা করেন। তবে সেখানে জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া রাত কাটানো যায় না বলে তারা চলে আসেন শাহজালাল মাজারে। গত এক সপ্তাহ ধরে তারা এখানেই থাকছেন।
এদিকে, শনিবার বিকেলে তারা যান বিএনপির সমাবেশস্থল সিলেট আলিয়া মাদরাসা মাঠে। এসময় তাদের সঙ্গে বিছানা-বালিশ থাকায় উপস্থিত অতি উৎসাহী কয়েকজন ছাত্রদল-যুবদল কর্মীরা গুঞ্জন তুলেন- ‘ধর্মঘটের ভয়ে এক সপ্তাহ আগে হবিগঞ্জ থেকে সিলেটের বিএনপিস্থলে এসে পৌঁছেছেন দলটির দুই কর্মী।’ বিষয়টি এভাবে তুলে ধরে বিএনপি ও ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইভও করেন।
তবে এ প্রতিবেদকের পক্ষ থেকে হবিগঞ্জের দুজনের কাছে সরাসরি এ বিষয়ে জানতে চাইলে রফিক নামের যুবক বলেন- ‘আমার স্ত্রীর সঙ্গে একটু গণ্ডগোল হয়েছে। আমার চারটি মেয়েকে ঘরে রেখে কাজের সন্ধানে সিলেট এসেছি প্রায় এক সপ্তাহ আগে। আসার পর থেকেই কাজ খুঁজছি। এখানেও (আলিয়া মাঠে) এসেছি কোনো কাজ পাই কি না দেখতে। প্রথমে রেল স্টেশনে থাকতে চেয়েছিলাম, কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) না থাকায় সেখানে থাকা যায়নি। তাই বাধ্য হয়ে মাজারে চলে এসেছি। বর্তমানে মাজারেই থাকছি এবং শিরনি ইত্যাদি খাচ্ছি।’
এদিকে, রফিকের সঙ্গে থাকা কামরুল নিজেকে বিএনপির কর্মী দাবি করে বলেন- ‘প্রথমে মাজারে আসলেও এখন বিএনপির সমাবেশ উপলক্ষে এখানে আছি। সমাবেশে থাকাই এখন উদ্দেশ্য। আমি বিএনপি কর্মী। আমি চাই আমার দল ক্ষমতায় আসুক।’
তবে কথার একপর্যায়ে তিনি জানান- এক সপ্তাহ আগে তিনি হবিগঞ্জ ছেড়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে আলাপ করলে তারা জানান, বিভিন্নজন লাইভ করে তাদের বিএনপিকর্মী হিসেবে পরিচয় দেওয়ায় রফিক ও কামাল নিজেদের ‘ভাইরাল করার ধান্ধা’ করছেন। ওরা প্রথমে বললো কাজের সন্ধানে এসেছে, এখন ক্যামেরার সামনে বলছে ‘বিএনপির সমাবেশে এসেছে’।