Breaking News

পালিয়ে বাঁচতে পারবেন না, প্রধানমন্ত্রীকে জাফরুল্লাহ

প্রধানমন্ত্রী ভুল পথে রয়েছেন উল্লেখ করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্ট্রি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ‘আপনি যা কথা বলেন, তা কাজে পরিণত করেন না। আপনি পরিষ্কারভাবে বলেছিলেন, বিরোধী দলের সমাবেশে বাধা দেবেন না। মানুষ যখন জেগেছে, রাস্তায় নেমেছে, সমাবেশ করছে, আপনি বাস বন্ধ করে দিয়েছেন। আপনি রিকশা বন্ধ করে দিয়েছেন। এই করে আপনি পালিয়ে বাঁচতে পারবেন না।’

প্রধানমন্ত্রীকে ভুল পথ থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়ে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘দিনকে দিন বলতে শিখুন। তাহলেই আমাদের সবার জন্য মঙ্গল হবে; বিশেষ করে আপনার জন্যও। দেশে সুশাসনের জন্য বিরোধী দলের কথা শোনেন। আলাপ-আলোচনায় অংশ নেন। তাহলেই দেখবেন সুশাসনের পথে অগ্রসর হচ্ছি।’

শনিবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ভাসানী অনুসারী পরিষদের সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী ভারতের অত্যাচার দেখছেন না মন্তব্য করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘প্রতি সপ্তাহে ভারত একজন করে লোককে সীমান্তে হত্যা করে। এর কোনো প্রতিবাদ নেই। আপনার পররাষ্ট্রনীতি চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তিস্তার পানি আনা তো দূরের কথা, সেটা আরও দূরে সরে দিল্লিতে চলে গেছে। আজকে যে অবস্থা, আপনি ক্রমান্বয়ে ভুল পথে অগ্রসর হচ্ছেন। ভুল পথ থেকে বেরিয়ে আসেন।’

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের এই ট্রাস্ট্রি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘আজকে যেকোনো সমাবেশ হলেই বাধা আসছে। আপনি কথা দিয়েছিলেন, মামলা-মোকদ্দমা করবেন না, কাউকে গ্রেপ্তার করবেন না। এখনো আলেমরা জেলে আছেন। তাদের আজও মুক্তি দেননি। আপনার এসব অনাচার বন্ধ করেন। না হলে বিপদ আরও ঘনিয়ে আসবে।’

‘আজকে বাংলাদেশের অবস্থাটা কী? মৃত্যু আর মৃত্যু। আত্মহত্যা। রাস্তায় মৃত্যু, কলেজে মৃত্যু। নারায়ণগঞ্জে মৃত্যু। এই মৃত্যুর জন্য দায়ী কে? চাল কিনতেই সাধারণ মানুষের আয়ের ৩২ ভাগ টাকা লাগে। বুঝতেই পারেন, আমাদের অবস্থাটা কী,’ বলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

এদিকে দুর্ভিক্ষের কথা বলে মানুষকে ভয় দেখানো হয়েছে বলে সমাবেশে অভিযোগ করেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘যদি দেশে কোনো দুর্ভিক্ষ হয়ও, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কোনো লোক না খেয়ে মারা যাবেন? এখনই তাঁরা বাজার করার জন্য ঢাকায় যেতে পছন্দ করেন না। তাঁরা সিঙ্গাপুর যেতে চান। তাঁদের এত টাকা, খরচ করার জায়গা পাচ্ছেন না। দুর্ভিক্ষ যদি হয়, তাঁদের কী আসে–যায়।’

ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘কারা টাকা পাচার করেছেন, আমরা জানি। কারা লুট করেছেন, আমরা জানি। কারা গরিবের সম্পদ চুরি করেছেন, আর কে সারা দেশের সমস্ত ভোটের পদ্ধতি ধ্বংস করে দিয়েছেন, জানি আমরা। তাঁদের বিচার হতে হবে। তাঁদের বিচার যদি না হয়, তাহলে দুর্বৃত্তরা চিরজীবন এ ধরনের অন্যায় করে মাফ পাবে। তাহলে দেশে ন্যায়-নীতি প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন না।’

সমাবেশে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘ভাড়াটে গুণ্ডা দিয়ে আন্দোলন দমন করতে পারবেন না। কোন পথ বেছে নেবেন, সেটা ঠিক করেন। মানুষ এবার নতুন স্বপ্ন বুনেছে। আপনারা মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছেন। কেবল বিরোধী দলেরই নয়, নিজেদের দলের সদস্যদেরও ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’

এই নির্বাচন কমিশনের সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের কোনো ক্ষমতা নেই উল্লেখ করে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘নির্বাচনকালীন সরকারের সমস্যা সাংবিধানিকভাবে সংস্কার করে বদলাতে হবে।’ সাংবিধানিক ক্ষমতাকে স্বৈরাচারী-জমিদারি ক্ষমতা বানানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্ব সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী হাসনাত কাইয়ুম প্রমুখ।

Check Also

ক্ষমা চাইলেন ডা. মুরাদ

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সাধারণ ক্ষমার আবেদন করেছেন সাবেক তথ্য ও …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *