খুলনা মহানগরীর কেডিএ অ্যাভিনিউ এলাকায় ২৭ বছরের এক নারীকে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে র্যাব। এ ঘটনার মূলহোতা আবু বক্কর মোল্লাকে গাজীপুর থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৬ এর সদস্যরা।
র্যাব-৬ এর পরিচালক লে. কর্নেল মোহাম্মদ মোসতাক আহমেদ সোমবার (৭ নভেম্বর) এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, কিছু দিন আগে আসামি আবু বক্কর মোল্লার সঙ্গে ভুক্তভোগী কবিতা রানীর (২৭) পরিচয় হয়। এই পরিচয়ের সুবাদে তাকে বিভিন্ন ধরনের আশ্বাস দিয়ে শনিবার (৫ নভেম্বর) রাতে আসামির ভাড়া বাড়িতে নিয়ে আসে। সেখানে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয় এবং ভুক্তভোগী চিৎকার কথা বলতে থাকে।
র্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, আসামি তাকে নিচু স্বরে কথা বলতে বলে। তখন আসামি আবু বক্কর ওই নারীকে হত্যার উদ্দেশে খাটের ওপর ফেলে ৫/৭ মিনিট মুখ চেপে ধরে। এতে তার মৃত্যু হয়। লাশ গোপনের কৌশল বের করার জন্য আসামি তার পরিচিত দুই বন্ধুকে ফোন দেয়। এরপর আবু বক্কর প্রথমে ধারালো বটি দিয়ে দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে। টুকরো টুকরো করে লাশ গুম করার উদ্দেশে ধারালো বটি দিয়ে উভয় হাতের কবজি আলাদা করে। পরনে থাকা পোশাক আলাদা করে লাশ একটি বাক্সের মধ্যে ঢুকিয়ে বেঁধে ফেলে এবং মাথা একটি পলিথিনে মুড়িয়ে রাখে।
তিনি জানান, বিচ্ছিন্ন হাতের কবজি একটি শপিং ব্যাগে ঢুকিয়ে পার্শ্ববর্তী স্থানে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। হত্যাকাণ্ডের শিকার নারীর পরিচয় নিশ্চিত না হওয়ায় থানা পুলিশ বাদী হয়ে কেএমপির খুলনার সোনাডাঙ্গা থানার একটি হত্যা মামলা করে। ঘটনাটি বিভিন্ন মিডিয়ায় বহুল প্রচারিত হয় এবং জনমনে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। ঘটনার পর থেকেই র্যাব-৬ গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করে এবং আসামি গ্রেফতারের লক্ষ্যে অভিযান অব্যাহত রাখে।
লে. কর্নেল মোহাম্মদ মোসতাক আহমেদ আরও জানান, রবিবার র্যাব-৬ এর একটি অভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে জানতে পারে, এই আসামি গাজীপুর জেলার বাসন থানা এলাকায় অবস্থান করছে। আজ দুপুর দেড়টার দিকে গাজীপুর জেলার বাসন থানাধীন চৌরাস্তা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আবু বক্কর মোল্লাকে গ্রেফতার করা হয়। সে বাগেরহাট জেলার রামপাল থানা এলাকার বাসিন্দা। কিন্তু খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গা থানার গোবরচাকা এলাকায় বসবাস করতো। গ্রেফতার আসামিকে সোনাডাঙ্গা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।