বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বিক্ষুব্ধদের দেওয়া তালা তৃতীয় দিনও ঝুলছে; বিক্ষোভও অব্যাহত আছে।বুধবার সকাল থেকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা শহরের টেম্পল রোডে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে অবস্থা নেন এবং সমাবেশ করেন।এ সময় তাদের কয়েকজন নেতার নাম নিয়ে নানা শ্লোগান দিতে দেখা যায়।
জেলা কমিটি বিলুপ্তির প্রায় নয় মাস পর সোমবার রাতে সজীব সাহাকে সভাপতি এবং আল-মাহিদুল ইসলাম জয়কে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঘোষিত ৩০ সদস্যের কমিটিতে ১৭ জন সহসভাপতি, পাঁচজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং ছয়জনকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে।
কমিটির তালিকা ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর পদবঞ্চিত ও কাঙ্ক্ষিত পদ না পাওয়া নেতাকর্মীরা রাত সাড়ে ৯টার দিকে শহরের টেম্পল রোডে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন। এক পর্যায়ে তারা জেলা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের কার্যালয়ের প্রবেশ পথে তালা ঝুলিয়ে দেন।
এরপর দলীয় কার্যালয়ের সামনে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন; শহরের প্রধান সড়কে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।বিক্ষোভে নামা ছাত্রলীগ নেতাদের দাবি, অযোগ্য দুজনকে সভাপতি ও সম্পাদক মনোনীত করা হয়েছে। এর ফলে ত্যাগীরা মূল্যায়ন পায়নি।
নবগঠিত কমিটির সহ-সভাপতি তৌহিদুর রহমান বলেন, আমারা শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি নিয়েছি। কার্যালয়ে বিক্ষুব্ধ কর্মীরা তালা দিয়েছেন। তবে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের প্রবেশ করার ফটক একটিই।
“তাই আওয়ামী লীগ অফিসে তালাবন্ধ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগসহ অন্য সংগঠনের নেতারা আসুক তালা খোলা হবে। কিন্ত এই অযোগ্য ছাত্রলীগ নয়।”
যোগ্য কারা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমি, মুকুল ইসলাম, মাহফুজার রহমান দুঃসময়ে রাজপথে ছিলাম। যাদের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে তারা সু-সময়ের। তবে সত্যই যদি আমাদের নেত্রী এই কমিটি বিষয়ে বলে থাকেন তাহলে উনার প্রতি সম্মান দিয়ে আমরা সব মেনে নিব। তা না হলে আন্দোলন চলবেই।”
নবনির্বাচিত সভাপতি সজিব সাহা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করেছি। কেন্দ্র বলেছে তারা যা করে করুক। ওসবে বাধা দিবে না। তারাও আমাদের ভাই। একসাথে সবাই চলতে হবে। কেন্দ্রের কথা মানছি, মানব এই আরকি। চেন অফ কমান্ড না মানলে সংগঠন চলবে কীভাবে?”
বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক আল-মাহিদুল ইসলাম জয় বলেন, “কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ যাচাই-বাছাই করে আমাদের নেতা মনোনীত করেছেন। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে নেতা হওয়ার জন্য জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছিলেন ৫৭ জন। সবাইকে নেতা বানানো সম্ভব না।”
যারা কমিটি গঠনের পর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন তারাও দায়িত্বশীল পদ পেয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তাদের এই আচরণ শিষ্টাচার বহির্ভূত। আমারা চেষ্টা করছি তাদের সাথে কথা বলে সমাধান করার। এছাড়া আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের বিষয়টি জেলার সভাপতি ও সম্পাদকসহ সিনিয়র নেতারা আছেন, তারা দেখছেন।”
আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে তালা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চেয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগিবুল আহসান রিপুকে কয়েক বার ফোন দিলেও তিনি ধরেননি।
সংগঠনটির জেলার দপ্তর সম্পাদক আল রাজি জুয়েল বলেন, যারা কাজটি করেছে ঠিক করিনি। দলীয় কার্যালয় তালাবদ্ধ রাখা অসংবিধানকি কাজ। দায়িত্বশীল নেতারা এই বিষয় দেখবেন।