রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানে ক্ষমতাসীন দলের আওয়ামী চেতনা ঝড়ের বেগে সংক্রমিত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সেই সঙ্গে দেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ প্রধানমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রিজভী।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, রাষ্ট্রের প্রতিটি বিভাগে আওয়ামী চেতনা ঝড়ের বেগে সংক্রমিত হয়েছে। বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ তার (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) নিয়ন্ত্রণে।
জেলহত্যা দিবসের আলোচনা সভায় দেয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের বক্তব্য আবারও প্রমাণ করেছে খালেদা জিয়া কোনো অপরাধের কারণে নয়, শেখ হাসিনার নির্দেশেই বন্দী। প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই বিচারের নামে প্রহসন মঞ্চস্থ করে তাকে আটকে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা স্বীকারোক্তি দিয়েছেন- আইন ও বিচারব্যবস্থা তার হাতের মুঠোয় জিম্মি। তিনি ইচ্ছা করলে কাউকে জেলে দিতে পারেন, আবার ইচ্ছা করলে কাউকে জেলের বাইরেও রাখতে পারেন। ‘হীরক রানীর’ দেশে তিনি যা ইচ্ছে তা-ই করছেন। আইন-আদালত, প্রশাসন সবকিছু তার হুকুমের গোলাম, কেউ স্বতন্ত্রভাবে তাদের কাজকর্ম সঠিকভাবে পালন করতে পারে না।
তিনি বলেন, ক’দিন আগে প্রধানমন্ত্রী স্বীকারোক্তি দিয়েছেন বাড়াবাড়ি করলে ‘হেফাজতের মতো বিএনপিকে’ দমন করা হবে। এই হুমকি প্রমাণ করে যে, তিনি আবার ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরের মতো ইতিহাসের রক্তাক্ত গণহত্যাযজ্ঞ চালানোর পাঁয়তারা করছেন।
রিজভী অভিযোগ করেন, নারায়ণগঞ্জের ভুলতায় ছাত্রদলের মশাল মিছিলে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সশস্ত্র গুণ্ডারা হামলা চালিয়েছে। হামলা থেকে নিজেকে বাঁচাতে গিয়ে গাড়িচাপায় মারা যায় রূপগঞ্জ থানার কাঞ্চন পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সহসভাপতি ইমন হাসান অনীক। এটি যুবলীগ-ছাত্রলীগ কর্তৃক সরাসরি হত্যাকাণ্ড। ওই ঘটনায় আহত হয়েছেন ছাত্রদল নেতা আবু হানিফ, আপু মিয়া, আমির হোসেনসহ অনেকে। তিনি এই ‘হত্যাকাণ্ডের’ তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপি নেতা মীর শরফত আলী সপু, রফিকুল আলম মজনু, আমিনুল হক, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।