ময়মনসিংহে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ ঘিরে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় কার্যত যোগাযোগ ‘বিচ্ছিন্ন’ ছিল পুরো নগর। এই নগরীতে বিএনপির সমাবেশস্থলে যেতে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নেতাকর্মীদের গন্তব্যে পৌঁছে দেন রিকশাচালক আমিনুল। বিভিন্ন সড়ক ঘুরে হেঁটে আসা নেতাকর্মীদের নিয়ে চলেন সমাবেশস্থলের দিকে। এ জন্য নেননি কোনো টাকা-পয়সা।
রিকশাচালকের এমন ত্যাগ নজর কেড়েছে বিএনপি নেতাদের। এরই মধ্যে রিকশাচালক পরিবারটির খোঁজ নিয়েছেন তাঁরা।
রিকশাচালক আমিনুল ইসলামের বাড়ি ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার গালাগাও ইউনিয়নের গালাগাও গ্রামে। এলাকায় কৃষিকাজ করে জীবন চালালেও ছেলের পড়ালেখার জন্য এক বছর ধরে ময়মনসিংহ নগরীতে থাকেন তাঁরা।
নগরীর ব্রাহ্মপল্লিতে চার হাজার টাকা ভাড়ায় একটি বাসায় থাকেন আমিনুল। তাঁর মেয়ে আনন্দমোহন কলেজের মাস্টার্সে এবং ছেলে পড়েন নটর ডেম কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে। পরিবারের খরচ চালাতে নগরীতে রিকশা চালান আমিনুল।
বিএনপির সমাবেশের আগের রাত থেকেই সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শুক্রবার রাত ১০টা থেকে শনিবার দুপুর ২টা পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে সমাবেশস্থল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে নেতাকর্মীদের নিয়ে যান আমিনুল। বিনা ভাড়ায় কয়েকশ নেতাকর্মীকে পৌঁছে দেন। বিষয়টি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে নজরে আসে বিএনপি নেতাদের।
রিকশাচালক আমিনুল ইসলাম জানান, জাতীয়তাবাদী আদর্শ তিনি হৃদয়ে লালন করেন। দলের প্রতি নিজের ভালোবাসার টান থেকে নেতাকর্মীদের সমাবেশে পৌঁছে দিয়েছেন। নিজের সামর্থ্য না থাকায় দলকে অন্যভাবে সহযোগিতা করার সুযোগ নেই। তাই শ্রম দিয়েই প্রিয় নেত্রীর মুক্তির জন্য ডাকা সমাবেশে লোক পৌঁছে দিয়েছেন। নেত্রীর মুক্তি মিললেই তাঁর শ্রম স্বার্থক হবে।
ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার বলেন, রিকশাচালক আমিনুলের দলের প্রতি নিঃস্বার্থ অবদানের কথা জানতে পেরে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান খোঁজ নেওয়ার নির্দেশ দেন। রিকশাচালককে খুঁজে বের করে দলের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘রিকশাচালক ভাইকে ভাড়া দিতে চাইলে নেন নাই। দিনমজুর এই ভাইয়ের পরিশ্রম ও ত্যাগ কখনও ভুলবার নয়।’