বরিশাল নগরীতে আয়োজিত হিজলা উপজেলা বিএনপির কর্মিসভা দুই গ্রুপের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মারামারিতে পণ্ড হয়ে গেছে। শনিবার (১৫ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর সদর রোড সংলগ্ন কীর্তনখোলা মিলনায়তনে এ ঘটনা ঘটে।
আগামী ৫ নভেম্বর বরিশালে বিএনপির বিভাগীয় মহাসমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে হিজলা উপজেলা বিএনপির এ কর্মিসভার আয়োজন করা হয়েছিল। সভার প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহান শিরিন ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক নান্নু। তারা সভাস্থলে পৌঁছার আগেই দুই পক্ষের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে মারামারি এবং চেয়ার ছোঁড়াছুঁড়ির ঘটনায় এ কর্মিসভা পণ্ড হয়ে যায়।
হিজলা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান সজল বলেন, দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করায় দেওয়ান মনির নামে এক ব্যক্তিকে বেশ কয়েক বছর আগে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু এরপরও তিনি নিজেকে হিজলা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দাবি করে আসছেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি শতাধিক কর্মী ও সমর্থক নিয়ে কর্মিসভায় প্রবেশ করেন। তবে তারা কেউ সভার ডেলিগেট নন।
তিনি বলেন, দেওয়ান মনির হিজলা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের স্বাক্ষর জাল করে তাদের ডেলিগেট কার্ড দিয়ে সভায় নিয়ে আসেন। এসময় অন্য নেতাকর্মীরা এর প্রতিবাদ জানালে দুইপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। তখন উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক দেওয়ান মো. শহীদুল্লাহ ও সদস্য সচিব মিজানুর রহমান মুকুল সভামঞ্চে ছিলেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে সভা স্থগিত করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সভায় হিজলা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল গাফফার তালুকদারের কর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে দেওয়ান মনিরের লোকজনের প্রথমে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে দুইপক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এসময় একপক্ষ আরেক পক্ষকে লক্ষ্য করে চেয়ার ছুঁড়ে মারেন। পরে গাফফার তালুকদার তার সমর্থকদের নিয়ে নগরীর সদররোড টাউনহল সংলগ্ন বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন।
এ বিষয়ে হিজলা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল গাফফার তালুকদার বলেন, স্বাক্ষর জাল করে মনির দেওয়ান তার লোকজনদের ডেলিগেট কার্ড তৈরি করে দিয়েছেন। তারা ভুয়া ডেলিগেট কার্ড নিয়ে সভাস্থলে প্রবেশ করেন। তারাই আজকের সভা ভণ্ডুল করে দিয়েছেন। তারা কিভাবে কার্ড পেলো বিষয়টি খতিয়ে দেখে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
তবে স্বাক্ষর জাল করে নিজের লোকজনদের ডেলিগেট কার্ড দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে মনির দেওয়ান বলেন, আমাকে দল থেকে বহিষ্কারের তথ্য সঠিক নয়। একটি মহল মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। আর আজ আমি একাই সভাকক্ষে প্রবেশ করেছিলাম, সঙ্গে কেউ ছিল না। তবে বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের অনেক নেতাকর্মী সভাকক্ষে প্রবেশ করেছিলেন। তারা বসার চেয়ার পাননি। চেয়ারে বসা নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে বিশৃঙ্খলা হয়েছে বলে দাবি করেন মনির দেওয়ান।
এ বিষয়ে বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক দেওয়ান মো. শহীদুল্লাহ বলেন, নির্ধারিত ডেলিগেটের বাইরে অনেক নেতাকর্মী সভাকক্ষে প্রবেশ করেন। অঙ্গ সংগঠনের অনেক জুনিয়র নেতার গলায় ডেলিগেট কার্ড ঝুলছিল। তাদের জন্য ডেলিগেটের কার্ড বরাদ্দ ছিল না। এ নিয়ে একপর্যায়ে কর্মীসভায় হট্টগোল ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। এ কারণে সভা স্থগিত করা হয়েছে। পরে সভার তারিখ নির্ধারণ করে পুনরায় জানানো হবে।