প্রেম অতঃপর বিয়ে
প্রকাশ:২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০,লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় জেসমিন আক্তার (৩০) নামে এক গৃহবধূকে মা’রধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি শাশুড়ি সাহেদা বেগমের (৬০) পেটে লাথি মেরে আহত করার অভিযোগ জামাই আশিকের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় গত ১৯ সেপ্টেম্বর থানায় অভিযোগ দেয়ার ৯ দিন পরেও কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি পুলিশ। এর আগে ১৭ সেপ্টেম্বর উপজেলার দক্ষিন গড্ডিমারী গ্রামের কাজির বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্তরা হলেন, রংপুর শহরের লালবাগ এলাকার শান্তিবাগের বাদশা মিয়ার ছেলে ও জেসমিনের স্বামী আশিক মিয়া (৩৫), আশিকের ছোট ভাই রাসেল মিয়া রাজু (২৭), আশিকের মা আয়েশা বেগম (৫৫) ও দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার বড়হরিপুর এলার রায়হান মানিকের স্ত্রী মিষ্টি বেগম (২৫) এবং লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার আমঝোল এলাকার সোবাহানের ছেলে মোতালেব (৪৫)।
নির্যাত’নের স্বীকার গৃহবধূ জেসমিন হাতীবান্ধা উপজেলার দক্ষিণ গড্ডিমারী গ্রামের কাজির বাজার এলাকার জহরুল হকের মেয়ে এবং তার মা সাহেদা বেগম।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে আশিকের সাথে মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে জেসমিনের। পরে সেই প্রেম ২০১৭ সাথে বিয়েতে পরিণত হয়। এর এক বছরের মাথায় আশিক ও জেসমিনের ঘর আলোকিত করে আসে একটি পুত্র সন্তান। এরপর হঠাতই কোন কারন ছাড়াই ৩ লক্ষ্য টাকা যৌতুক হিসেবে জেসমিনকে বাবার বাড়ি থেকে আনতে বলে। কিন্ত এত টাকা জেসমিন আনতে রাজি হয় না। কারন তার বাবার পক্ষে এত টাকা বহন করা সম্ভব নয়। ফলে তার উপর নেমে আসে নির্যাত’নের খোরাক। স্বামী, ননদ, দেবর, শাশড়ি মিলে শুরু করে অত্যাচার। একের পর এক নির্যাত’ন চলতে থাকে।
অবশেষে জেসমিন এসব সহ্য করতে না পেরে গত ২৩ এপ্রিল তার সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসে। এর পর থেকে আর কোন খোঁজ খবর নেয়নি স্ত্রী সন্তানের। উল্টো সে ফোন দিয়ে জেসমিনের মা-বাবাকে অকোট্ট ভাষায় গালি গালাজ করে।
এরই মধ্যে গত ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে অভিযুক্তুক্তু মোতালেবের সহযোগীতায় আশিক জেসমিনের বাবার বাড়িতে এসে তার বাবার কাছে যৌতুকের তিন লক্ষ টাকা নিয়ে তার সাথে জেসমিনকে রংপুরের বাড়িতে যেতে বলে। কিন্তু জেসমিন তাতে রাজি না হলে সে মা’রধর শুরু করে এবং জেসমিনকে বাঁচাতে মা সাহেদা বেগম আসলে আশিক জেসমিনের মায়ের পেটে লাথি মেরে ফেলে দেয়। এ সময় তাদের আত্মচিতকারে আশে পাশের লোকজন ছুটে আসলে আশিক পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা দ্রুত জেসমিন ও সাহেদা বেগমকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
জানতে অভিযুক্ত আশিকের মোবাইল ফোনে ০১৭২৩০৬১৮৩৫ একাধিক কল করা হলেও সে কলটি রিসিভ করেনি।
জেসমিন আক্তারের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আশিকের সাথে প্রেমের মাধ্যমে বিয়ে হয়। কিন্ত আমি জানতাম না যে সে নেশা করে। সে আমার কাছে অনেক কিছু লুকিয়েছিলো। বিয়ের পরেই সে টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। টাকা দিতে না পারায় প্রতিনিয়ত শাশুড়ি, ননদ, দেবর ও আশিক নির্যাত’ন করে। আমি আর সেখানে যেতে চাই না। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম জানান, এ বিষয়ে আমি খোজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।