লালমনিরহাটের পাটগ্রামে অবৈধভাবে এক ভারতীয় তরুণীকে এনে গোপনে বিয়ে করার অভিযোগ উঠেছে। আর এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের নবীনগর গ্রামের সাইদুল ইসলামের ছেলে সাদ্দাম হোসেন।
শনিবার (৬ জুন) রাতে ভারতীয় ওই তরুণীরকে গোপনে বিয়ে করেন তিনি।
স্থানীয়দের অভিযোগ অবৈধ উপায়ে ভারতীয় ওই তরুণীকে ভাগিয়ে এনে ওই যুবক বিয়ে করেন। স্থানীয় কাজী তাদের বিয়ে পড়ান। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে জানালে ওই তরুণীকে উদ্ধারে অভিযান চালায় পুলিশ। কিন্তু এলাকার ইউপি সদস্যের সহযোগিতায় ওই তরুণীকে অন্যত্র সরিয়ে রাখা হয় বলেও অভিযোগ করেন তারা।
জানা যায়, গত তিন দিন আগে সাদ্দাম হোসেন ও তার বড় ভাই ফল ব্যবসায়ী সাজাহান মিয়া ওই ভারতীয় তরুণীকে দহগ্রাম ইউনিয়নের ভারতীয় সীমানা দিয়ে অবৈধপথে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। সেদিন থেকে নিকট আত্মীয় পরিচয়ে তাকে তাদের বাড়িতে রাখা হয়। এরপর শনিবার রাতে ভারতীয় ওই তরুণীর সাথে গোপনে বিয়ের প্রস্তুতি চলছিল। এরই মধ্যে অবৈধ পথে ভারতীয় তরুণীর বাংলাদেশে আসার খবরের সত্যতা জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্থানীয় ইউপি সদস্যকে দায়িত্ব দেন।
কিন্তু ওই ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বাবলুর সহযোগীতায় ভারতীয় তরুণী ও যুবক সাদ্দামকে অন্যত্র ভাগিয়ে দেওয়া হয়। পরে বাউরা ইউনিয়নের কাঁঠালতলা এলাকার আবু তালেব ও শাহজাহানের বাড়িতে নিয়ে গোপনে বিয়ে পড়ান ইউনিয়ন কাজী একে এম ফজলুল হক। বিয়ের খবর পেয়ে পুলিশ সেখানেও অভিযান চালায়। কিন্তু টের পেয়ে সেখান থেকেও সটকে পড়েন তারা।
বিয়ে পড়ানোর বিষয়টি অস্বীকার করে বাউরা ইউনিয়নের কাজী একেএম ফজলুল হক বলেন, আমি ভারতীয় ওই তরুণীর সাথে কারও বিয়ে রেজিস্ট্রি করিনি। যেহেতু তিনি বাংলাদেশের নাগরিক নন, তাই বিয়ে পড়ানোর সুযোগ নেই।
ভারতীয় তরুণীকে ভাগিয়ে দেওয়ার বিষয়টিও অস্বীকার করেছেন ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বাবলু। তিনি বলেন, ইউএনও স্যারের ফোন পেয়ে ওই বাড়িতে খোঁজখবর নিয়ে ঘটনার সত্যতা জানতে পারি। কিন্তু সেখানে গিয়ে ভারতীয় ওই তরুণীকে পাইনি। পরে বিষয়টি ইউএনও স্যারকে অবগত করি।
পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন কুমার মহন্ত বলেন, বাউরা ইউনিয়নের নবীনগর গ্রামের এক যুবকের সাথে ভারতীয় তরুণীর বিয়ে হচ্ছে-এমন খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠাই। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পায়নি। পরে আরেক সূত্রে জানা যায়, কাঁঠালতলা এলাকায় আবু তালেবের বাড়িতে তরুণীকে রাখা হয়েছে। পরে সেখানেও অভিযান চালিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে পুলিশ উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, এডিএম স্যারের ফোন পেয়ে জানতে পারি ভারতীয় তরুণীর সাথে স্থানীয় এক যুবকের বিয়ে হচ্ছে। পরে সেখানে স্থানীয় মেম্বারকে পাঠিয়ে ঘটনার সত্যতা জানতে পারি। এরপর পুলিশের উপস্থিতি জানতে পেরে তারা পালিয়ে যায়।