দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর হাসপাতালে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষায় এন-৯৫ মাস্কের মোড়কে সাধারণ মাস্ক দেওয়া হয়েছিল। এ ঘটনা তদন্ত করে ১২ দিন আগে প্রতিবেদন দিয়েছে কমিটি। কিন্তু স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সেই প্রতিবেদন এখনও ‘পড়েননি’।
মাস্ক কেলেঙ্কারিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যমকে জানান, রিপোর্ট দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।তিনি বলেন, রিপোর্ট আসুক। তারপর আমি দেখব।এদিকে মাস্ক কেলেঙ্কারি তদন্তে গঠিত কমিটি জানিয়েছে ২৮ এপ্রিল তারা স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন।এ বিষয়ে মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জানান, করোনাভাইরাসের কারণে অফিসে ‘কম যাচ্ছেন’ তিনি। সে কারণে এখনও প্রতিবেদনটি ‘দেখা হয়নি’।
তিনি বলেন, কেউ যদি ভুল করে থাকে। তাকে ভুলের জন্য যা যা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, সেটা অবশ্যই দেখা হবে। অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মার্চের শেষ ভাগে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে রোগীর নমুনা পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য সংক্রমণ এড়াতে চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের এন-৯৫ মাস্ক সরবরাহ করা হয়। ওই মাস্কের প্যাকেটে লেখা ছিল ‘এন-৯৫’। কিন্তু ভেতরে পাওয়া যায় সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্ক।
ফলে সেগুলো আসল মাস্ক কি না তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসকদের ব্যাপক হারে করোনাভাইরাস সংক্রমণের পেছনে কারণ হিসেবে এই মাস্কের প্রসঙ্গও তুলছেন অনেকে।
কেন্দ্রীয় ঔষধাগারকে এসব মাস্ক সরবরাহ করেছিল জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ঘটনা তদন্তে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন অনুবিভাগ) মো. সাইদুর রহমানকে প্রধান করে ২০ এপ্রিল কমিটি গঠন করা হয়। গঠিত এ কমিটিকে ২৪ এপ্রিলের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হলেও পরে আরও পাঁচ দিন সময় বাড়ানো হয়। সে অনুযায়ী প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ২৯ এপ্রিল। কিন্তু এর একদিন আগে ২৮ এপ্রিল স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দেয় কমিটি।
প্রতিবেদনে কী আছে তা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তদন্ত কমিটি প্রধান মো. সাইদুর রহমান।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মিডিয়া সেলের প্রধান হাবিবুর রহমান খানের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনের ব্যাপারে খুবই গোপনীয়তা বজায় রাখা হয়। এ কারণে আমাকে এ বিষয়ে জানানো হয়নি। আমি যতদূর জেনেছি প্রতিবেদনটি জমা দিয়েছে। তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। এখনও সিদ্ধান্তে পৌঁছেনি।
তিনি আরও বলেন, সিদ্ধান্তে পৌঁছালে হয়ত আমি জানতে পারব। আর সিদ্ধান্ত হলে অবশ্যই সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হোক, অভিযুক্ত হলে তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাবে। আর এটা যেহেতু একটা স্পর্শকাতর ইস্যু। এটার সিদ্ধান্ত হয়ত মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ই নেবেন।