Breaking News

বাবার থাপ্পরের প্রতিশোধ নিতে শিশু ছেলেকে হ’ত্যা!

গাজীপুরে মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণের তিন দিন পর তালাবদ্ধ ঝুটের গুদাম থেকে এক শিশুর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে র‌্যাব ১-এর সদস্যরা। এ ঘটনার মূল হোতা এক পোশাককর্মীকে আটক করা হয়েছে।আজ রোববার বিকেলে র‌্যাব ১-এর স্পেশালাইজ কোম্পানি পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল-মামুন এ তথ্য জানিয়েছেন।

নিহত শিশুর নাম মো. আলিফ হোসেন (৫)। সে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনাবাড়ীর পারিজাত আমতলা এলাকার ফরহাদ হোসেনের ছেলে।আটক পোশাককর্মীর নাম মো. সাগর (১৯)। তিনি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার পদিপাড়ার বাসিন্দা।

র‌্যাব কর্মকর্তা জানান,কোনাবাড়ীর পারিজাত এলাকার ফরহাদ হোসেনের শিশু সন্তান আলিফ হোসেন গত ২৯ এপ্রিল বিকেল ৪টার দিকে নিজেদের বাসা থেকে নিখোঁজ হয়। স্বজনরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে তার সন্ধান না পেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। নিখোঁজের পরের দিন ভিকটিমের বাবার মোবাইল ফোনে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা শিশু আলিফকে অপহরণের কথা জানিয়ে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। তা না হলে তাঁর সন্তানকে খুন করার হুমকি দেয়। শিশু সন্তানের হদিস না পেয়ে তাঁর পরিবার র‌্যাব ১-এর সাহায্য চায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে র‌্যাব আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে তদন্ত শুরু করে।

লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল-মামুন আরো জানান, মুক্তিপণের টাকা নিতে অপহরণকারীরা গাজীপুরের পুবাইল রেললাইন এলাকায় গতকাল শনিবার রাতে অবস্থান করে। এ গোপন সংবাদ পেয়ে র‌্যাব কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল-মামুনের নেতৃত্বে র‌্যাব ১-এর সদস্যরা সেখানে অভিযান চালিয়ে অপহরণকারী চক্রের মূলহোতা সাগরকে আটক করে। এ সময় তাঁর কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যে কোনাবাড়ী এলাকায় তাদের ভাড়া করা তিনতলা ফ্ল্যাটের একটি ঝুটের গুদামে লুকিয়ে রাখা একটি প্লাস্টিকের বস্তার ভিতর থেকে আলিফের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। ভিকটিমের বাড়ির তিন তলার ভাড়া বাসায় থেকে স্থানীয় পোশাক কারখানা চাকরি করতেন সাগর।

র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আটক সাগর জানান, তাঁর তিন বন্ধু মিলে প্রায় ছয় মাস ধরে ভিকটিমদের বাড়ির তৃতীয় তলার ফ্লাটের ভাড়া বাসায় থেকে গার্মেন্টসে চাকরি করে আসছেন। উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করায় এবং ভবনের ছাদে উঠে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করার কারণে সপ্তাহ খানেক আগে রুমমেট জুয়েল আহমেদ ও সবুজকে কয়েকটি চড়-থাপ্পর দেন আলিফের বাবা। এতে ক্ষুব্ধ হয় সাগর ও তাঁর বন্ধুরা।

এ থাপ্পরকে কেন্দ্রে করে এবং দ্রুত ধনী হওয়ার স্বপ্ন দেখে তারা। ওই থাপ্পরের প্রতিশোধ নিতে জুয়েল বুধবার বিকেলে কৌশলে খেলার প্রলোভন দেখিয়ে বাড়ির ছাদে নিয়ে যায়। সেখানে আলিফকে গলা টিপে ও শ্বাসরোধে হত্যা করে সাগর ও জুয়েল। পরে সাগর ও জুয়েল শিশুর লাশ একটি প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে একই ভবনে তাদের ভাড়া বাসার পাশের ঝুটের গুদামের ভেতর লুকিয়ে রাখেন। তারা বাসায় রাত্রীযাপন করে পরের দিন সকালে বাসা থেকে পালিয়ে যান। পরে তারা বিভিন্ন মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ভিকটিমের বাবার মোবাইলে ফোন করে অপহরণের কথা বলে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।

র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত সাগর আরো জানান, এ অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী জুয়েল আহমেদ ওরফে সবুজ। তিনি একজন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী। এই অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে তিনি নিজেকে শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার পরিকল্পনা করেছিলেন।

এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান ওই র‌্যাব কর্মকর্তা।

Check Also

জুলুম থেকে বাঁচতে মহানবী (সা.) যে দোয়া পড়তে বলেছেন

মহানবী (সা.) যেকোনো ধরনের জুলুম থেকে বাঁচতে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চেয়ে একটি দোয়া পড়তে বলেছেন। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *