মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফুলতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাসুক আহমদের বিরুদ্ধে ‘বিকৃত যৌনাচার’র অভিযোগ এনে কুলাউড়ায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার স্ত্রী।
রবিবার (২ অক্টোবর) দুপুরে শহরের একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তিনি।
লিখিত বক্তব্যে মাসুক আহমেদের স্ত্রী বলেন, তিনি জুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক। ২০০২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মাসুক আহমদের সঙ্গে পারিবারিকভাবে তার বিয়ে হয়। ২০০৩ সালে আগস্ট মাসে তাদের ঘরে এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। সন্তান জন্মের কিছুদিন পর স্বামীর আসল চরিত্র তার কাছে প্রকাশ পায়। তিনি মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে ও ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সব মুখ বুঝে সহ্য করেন। বর্তমানে তিনি তার বাবার বাড়ি বসবাস করছেন।
তিনি বলেন, বহুগামী মাসুক আহমদ একজন নারী লোভী। তার কারণে বাসায় কোনো কাজের মেয়ে থাকতে পারত না। ফুলতলার এক ব্যক্তির স্ত্রীর ওপর তার কুদৃষ্টি পড়ে। ওই নারীকে স্বামীর কাছ থেকে ছাড়িয়ে এনে জুড়ীতে একটি বাসায় রেখে দুমাস অপকর্ম করেন।
তার আরো অভিযোগ, দুই সন্তানেরে এক জননী আমাদের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতেন। ওই গৃহকর্মীকে বিয়ে করে তিনি (মাসুক) বাসায় রাখেন। এ ছাড়া পেশাদার যৌনকর্মী বাসায় এনে নাচের আসর, মদের আসর এবং বিকৃত যৌনাচারে লিপ্ত হতেন। এসবের প্রতিবাদ করায় তার ওপর নেমে আসে নির্যাতন-নিপীড়ন। একদিন নির্যাতনকালে ৯৯৯-এ কল দিয়ে জানালে জুড়ী থানার ওসি সঞ্জয় চক্রবর্তী তাকে উদ্ধার করে বাবার বাড়ি কুলাউড়ায় দিয়ে যান।
মাসুকের স্ত্রী আরো বলেন, শুধু তাই নয় মাসুক আহমদ তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করা গৃহকর্মীকে সরানোর শর্তে ২০ লাখ টাকা দাবি করেন। থানায় এসব অভিযোগে মামলা দিতে গেলে মাসুক আহমদ দলের শীর্ষ নেতা ও প্রভাবশালী হওয়ায় থানা পুলিশ মামলা গ্রহণ করেনি। ফলে গত ৩০ জুন মৌলভীবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করি। আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে আপস করার শর্তে আদালত প্রথম দফায় জামিন দেন। কিন্তু আদালতের শর্ত ভঙ্গ করায় ২য় দফায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলেও ১১ অক্টোবরের মধ্যে আপস মিমাংসার শর্তে আদালত ২য় দফায় তাকে জামিন দেন।
তার আরো অভিযোগ, জামিনে এসে মাসুক আহমদ বিষয়টির আপস নিষ্পত্তি না করে জুড়ীতে সংবাদ সম্মেলন করে স্ত্রীর বিরুদ্ধে নানা অপবাদ দিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
তিনি বলেন, আদালতের সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বিষয়টির সুন্দর নিষ্পত্তির আশা করি।
অভিযোগের বিষয়ে জুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফুলতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাসুক আহমদ বলেন, আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। আমার বিরুদ্ধে আদালতে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগগুলো মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।
জুড়ী থানার ওসি সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, মাসুক আহমেদের স্ত্রীকে থানায় অভিযোগ জমা দিতে বললেও তিনি দেননি।