নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘১৯৭৫ সালে শুধু বঙ্গবন্ধুকে না; তার পরিবারকেও হত্যা করেছে। এ হত্যাকাণ্ডে শিশু রাসেলকেও তারা ছাড়েনি। শিশু রাসেলের ছবির দিকে তাকালেই দেখি তার আলোকিত চোখ। সে বেঁচে থাকলে আমাদের কী দিতে পারতো! শিশু রাসেল রাষ্ট্রীয় কোনো কিছুর সাথে জড়িত ছিল না। তারপরও তাকে কেন হত্যা করা হলো?’
তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের সময় রাসেল বলেছিল “আমি মায়ের কাছে যাব। আমাকে মেরো না; আমি কখনো পরিচয় দিব না।” তারপরও ঘাতকরা শিশু রাসেলকে ছাড়েনি; তারা পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। শেখ রাসেল সমস্ত পৃথিবীর শিশুদের মানবিকতার প্রতীক হয়ে উঠছে। শিশু রাসেলের মতো অমানবিক হত্যাকাণ্ড খুবই বেদনাদায়ক। পৃথিবী যদি সত্যি ও মানবিকতার কথা বলে তাহলে সমগ্র পৃথিবী একদিন শেখ রাসেল দিবস পালন করবে।’
মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) ঢাকায় বাংলামটরস্থ বিআইডব্লিউটিসি অফিসে শেখ রাসেল দিবস ২০২২ উদযাপন উপলক্ষে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বেগম লায়লা জেসমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. আলমগীর, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান আহমদ শামীম আল রাজী এবং নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. সাজেদুল ইসলাম।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু পরিবারের কাছে জাতি কৃতজ্ঞ। বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন দেশ ও রাষ্ট্র পেয়েছি। সবকিছুতে ব্যর্থ হয়ে বিরোধিরা বলছে, একটি পরিবারের কাছে দেশ জিম্মি হয়ে গেছে। ৭৫ এর পর ২১ বছর বিরোধিরা দেশকে কিছুই দিতে পারেনি। মৌলিক অধিকার দিতে পারেনি। দেশকে রসাতলে নিয়ে গেছে। অর্থনীতি ধ্বংস করে দিয়েছে। প্রতিবেশী দেশের ভীতি তৈরি করা হয়েছে। ১৯৯৬ সালের আওয়ামী লীগ সরকারের ৫ বছরের উন্নয়নকে টেনে ধরতে সন্ত্রাসবাদ থেকে জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করা হয়েছিল। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব শূণ্য করার অপচেষ্টা করেছিল। গত ১৪ বছরে দেশে ধারাবাহিকভাবে উন্নয়ন হয়েছে। এ উন্নয়নের বড় ছাতা হলেন শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর রক্ত। একটি নেতৃত্ব কী দিতে পারে তা প্রমাণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। তিনি মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি আমাদের সাহস তৈরি করেছেন। এসব কারণে বিরোধীদের প্রধানমন্ত্রীর ওপর আক্রোশ। বঙ্গবন্ধুর পরিবারটি দেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। শেখ হাসিনা আমাদের একমাত্র নিয়ামক শক্তি। বিরোধিরা আবারও ১৫ আগস্টের মতো রক্তপাত করতে চায়। সে জায়গায় আমাদের সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যাকারীদের বিচার করা যাবে না, সে লক্ষ্যে অধ্যাদেশ জারি করে এবং পরে তা আইনে পরিণত করা হয়। এর থেকে দুর্ভাগ্য দেশের জন্য, জাতির জন্য এবং দেশের মানুষের জন্য কিছুই হতে পারে না। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার বিচারের রায় কাযর্কর করা হয়েছে। যারা পলাতক আছে তাদের বিচারের দাবিতে দেশে আনার চেষ্টা চলছে। কারণ খুনিরা দেশকে এবং দেশের মানুষকে এগোতে দেয়নি। সেই খুনিদের বিচার করতে পেরেছি বলেই অপরাধীদেরকে আমরা দমন করতে পেরেছি। তাই বাংলাদেশ আজ পৃথীবিতে উন্নয়নের রোল মডেল।
অনুষ্ঠানে শহিদ শেখ রাসেলসহ ১৫ আগস্টের শহিদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দেশ ও জাতির উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য দোয়া করা হয়।
এর আগে প্রতিমন্ত্রী বিআইডব্লিউটিসি অফিসে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।