রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে একটি ট্রেনে কিশোরীকে (১৭) গণধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় জবানবন্দি দিয়েছেন দুই আসামি। জবানবন্দিতে তারা শারীরিক সম্পর্কের কথা স্বীকার করলেও এটিকে ধর্ষণ বলতে নারাজ। তাদের দাবি, ওই কিশোরীর সম্মতিতে টাকার বিনিময়ে অনৈতিক কাজ করেন তারা।
শনিবার (৮ অক্টোবর) রেলওয়ে থানা পুলিশ পাঁচ আসামিকে আদালতে হাজির করে। ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী আশরাফের আদালতে ওই ঘটনায় করা মামলায় গ্রেফতার সুমন (২১) ও নাঈম (২৫) এ জবানবন্দি দেন।
বাকি তিন আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। মামলার অপর তিন আসামি হলেন: নাজমুল (২৫), আনোয়ার (২০) ও রোমান ওরফে কালু (২২)।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, দুজনই টাকার বিনিময়ে ওই কিশোরীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছিলেন। জোরপূর্বক কোনো শারীরিক সম্পর্ক বা নির্যাতনের ঘটনা ঘটেনি।
জবানবন্দিতে দুজনই জানান, তারা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে পরিচ্ছন্নতার কাজ করেন। গত শুক্রবার (৭ অক্টোবর) রাতে কাজ শেষে ফেরার পথে রেলের একটি বগিতে কয়েকজন ছেলেকে দেখতে পান। তারাও এগিয়ে যান। গিয়ে দেখেন একজনের সঙ্গে অনৈতিক কাজে লিপ্ত রয়েছে ওই কিশোরী। তখন একজনকে জিজ্ঞেস করেন, এখানে কী হচ্ছে? উত্তরে বলেন, ‘তোরাও এ কাজ করতে পারবি’।
জবানবন্দিতে দুই যুবক আরও জানান, তারা মেয়েটির সঙ্গে কথা বললে সে টাকা দাবি করে। আসামি সুমন ২০০ টাকা দেন। অন্য আসামি নাঈম দেন ১০০ টাকা। দুজনে মেয়েটির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন। তারা দাবি করেন, পরে মেয়েটি পুলিশের হাতে ধরা খেয়ে ধর্ষণের মামলা করে।
শুক্রবার রাতেই ওই কিশোরী কমলাপুর রেলওয়ে থানায় ধর্ষণ মামলা করে। মামলায় অভিযোগ করা হয়, মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে শুক্রবার রাতে নেত্রকোনা থেকে হাওর এক্সপ্রেসে কমলাপুর রেলস্টেশনে আসে ওই কিশোরী। সেখানে কয়েকজন তরুণ-যুবক কৌশলে তাকে স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা তুরাগ কমিউনিটি ট্রেনের একটি বগিতে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে ধর্ষণ করে ফেলে রেখে যায় তারা। কর্তব্যরত পুলিশ তাকে ট্রেনের বগিতে পড়ে থাকতে দেখে উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করে রেলওয়ে পুলিশ। এছাড়া এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে এমন একজন পলাতক রয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।