Breaking News

বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে চার প্রেমিকার সঙ্গে মেলামেশা করেন ম্যাজিস্ট্রেট, তারপর!

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার বাসিন্দা নাদির হোসেন শামীম। তিনি বর্তমানে ভোলা জেলায় সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কর্মরত। গতকাল রবিবার ঢাকায় তার বিয়ে করার খবরে চার প্রেমিকা জানান দেন তাদেরকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মেলামেশা ছাড়াও বিয়ে পর্যন্ত করেছেন ওই ম্যাজিস্ট্রেট। এর মধ্যে এক প্রেমিকা তার গ্রামের বাড়িতে অবস্থান নিলে পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে। অপরদিকে আরেক প্রেমিক জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দালে করেছেন। ঘটনাটি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয় এলাকায়।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ৩৬তম বিসিএস উত্তীর্ণ হন নাদির হোসেন শামীম। এরপর ভোলা জেলায় সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে যোগ দেন তিনি। তিনি ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ২নং গৌরীপুর ইউনিয়নের পশ্চিম শালীহর গ্রামের আব্দুল কদ্দুসের পুত্র।

জানা যায়, নাদির হোসেন শামীমের সঙ্গে সাতক্ষীরার আরেক জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের বিয়ের সিদ্ধান্ত হয় গতকাল রবিবার। ঢাকায় এ বিয়ে হওয়ার কথা। এ খবর শোনে স্বামীর স্বীকৃতির দাবিতে গত শনিবার সন্ধ্যায় এক নারী গৌরীপুর পৌর শহরের উত্তরবাজার মহল্লায় ম্যাজিস্ট্রেট নাদির হোসেন শামীমের বাবার ভাড়া বাসায় অবস্থান নেন। ওই নারী এ সময় তাকে স্ত্রী মর্যাদা দেওয়ার দাবি জানান।

ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক ও এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে যান। এ সময় আব্দুল কদ্দুছ জানান, তার ছেলে সঙ্গে তাদের পারিবারিক সম্পর্ক নেই। এই নারীর সঙ্গে তাদের ছেলের কোনো সম্পর্ক আছে কি না তা তিনি জানেন না।

অপরদিকে এই ম্যাজিস্ট্রেটের বিয়ের খবরে চট্টগ্রামের আরেক নারীও শামীমের স্ত্রী দাবি করেন। ওই নারী এ প্রতিনিধিকে জানান, তার সঙ্গে হুজুর দিয়ে ধর্মীয় শরীয়া মোতাবেক বিয়ে করে আড়াই বছর ঘরসংসারও করেছেন। তিনি এ অভিযোগটি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও থানা প্রশাসকেও অবহিত করেছেন।
এদিকে গতকাল রবিবার সকালে গৌরীপুরের আরেক নারী নাদির হোসেন শামীমের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ নিয়ে যান, জেলা প্রশাসক না থাকায় সেই অভিযোগ রিসিভ করেনি কেউ।

অনুসন্ধানে জানা যায়, চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি এক প্রেমিকা বিয়ের দাবিতে নাদির হোসেন শামীমের বাবার রেলওয়ে স্টেশন এলাকার ভাড়া বাসায় অবস্থান নেন। ওই নারী অযৌক্তিক দাবি নিয়ে পরিবারকে নির্যাতন-নিপীড়নের অভিযোগ এনে শামীমের বাবা উল্টো ওই নারীর বিরুদ্ধে গৌরীপুর থানায় সাধারণ ডায়রি করেন। এ নারীর বান্ধবী ঘটনার সাক্ষী দেওয়া এবং তার বান্ধবীকে বিয়ে করার জন্য শামীমের পরিবারের অনুরোধ জানান। এই অনুরোধের ঘটনাকে ‘ভয়ভীতি প্রদর্শন’ উল্লেখ শামীমের ভাই কবীর হোসেন সুজন ২৩ ফেব্রুয়ারি আরেকটি সাধারণ ডায়রি করেন। সাধারণ ডায়েরি প্রসঙ্গে গৌরীপুর থানার উপপরিদর্শক মো. এমদাদুল হক জানান, সাধারণ ডায়েরি করা হলেও তদন্ত কাজ তাদের অনুরোধে বন্ধ রাখা হয়।

ঘটনা প্রসঙ্গে গৌরীপুর থানার ওসি মো. বোরহান উদ্দিন জানান, গৌরীপুর উত্তর বাজার এলাকায় বিয়ের দাবিতে এক নারীর অবস্থান নিয়েছেন। খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও ভোলার জেলা প্রশাসক স্যারকে অবহিত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসকের বিচারের আশ্বাস ও মেয়েটিকে ঘটনা এলাকায় মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরো জানান, রবিবার আরেকটি মেয়ে লিখিত অভিযোগ নিয়ে আসে, তাকে জেলা প্রশাসক ময়মনসিংহ পাঠানো হয়েছে।

গৌরীপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম জানান, ওই ম্যাজিস্ট্রেটের বাড়িতে এক নারী অবস্থান নিলে সেখানে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে মাসুদ মিয়া রতন ও দিলুয়ারা আক্তারকে পাঠানো হয়। এখন জানা গেছে আরো ২টি মেয়ের সঙ্গে নাদির হোসেন শামীম সাহেব অনৈতিক সম্পর্ক। তারাও মৌখিক অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনায় আমরা বিব্রত। মহিলা কাউন্সিলার দিলুয়ারা আক্তার জানান, মেয়েদের ঘটনা শোনে আমি বিস্মিত! কাউন্সিলার মাসুদ মিয়া রতন বলেন, একজন ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে নারীদের এতো অভিযোগ শুনে, আমরাও লজ্জিত।

এ বিষয়ে জানতে ম্যাজিস্ট্রেট নাদির হোসেন শামীমকে ফোন দিলে দুটি নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তার ভাই এ প্রসঙ্গে সোমবার বিকেলে বলেন, অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে তারা মিথ্যা অপবাদ ছাড়াচ্ছে। এই নিয়ে এর আগে দুই নারীর বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়রি পর্যন্ত করা হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেট বিয়ের কথা সত্যতা স্বীকার করে বলেন, রবিবার আমি ঢাকায় ওই বিয়েতে উপস্থিত থেকে বিয়ে সম্পন্ন করেছি। উনি (ম্যাজিস্ট্রেট) নববধূ নিয়ে নিজ কর্মস্থরে চলে গেছেন।

Check Also

পরকীয়ার জেরে স্বামীকে ২২ টুকরো করে শহরে ‘ছেটালেন’ স্ত্রী

ফের লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে ভারতের দিল্লিতে। দেশটিতে স্বামীকে হত্যার দায়ে এক নারীও ও …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *