Breaking News

জামালপুরে স্কুলছাত্রী হত্যার ৭ দিনেও মামলা নেয়নি পুলিশ

জামালপুরের মাদারগঞ্জে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী প্রিয়া হত্যাকাণ্ডের ৭ দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন ওই ছাত্রীর বাবা জামিল মিয়া। মেয়ের উত্ত্যক্তকারী প্রতিবেশী প্রান্ত নামের এক বখাটে যুবকের সঙ্গে যৌতুকসহ বিয়েতে রাজি না হওয়ায় প্রান্ত ও তার লোকজনরা প্রিয়াকে অপহরণ করে বিষ পানে হত্যা করেছে বলে প্রিয়ার বাবা অভিযোগ করেন। পুলিশ এ ঘটনায় মামলা না নেয়ায় উত্ত্যক্তকারী প্রান্ত ও তার লোকজনদের হুমকির মুখে জামিল মিয়া তার পরিবার পরিজন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মাদারগঞ্জ উপজেলার গুনারিতলা ইউনিয়নের জাঙ্গালিয়া ছুরিপাড়া গ্রামের ইসরাফিল হোসেন বাবলুর ছেলে মুহাইমিনুল ইসলাম প্রান্ত প্রতিবেশী জামিল মিয়ার মেয়ে প্রিয়া আক্তারকে স্কুলে যাওয়া আসার পথে দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত ও যৌন হয়রানি করে আসছিল। প্রিয়া আক্তার জাঙ্গালিয়া ডিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ছিল। সে তার বাবা-মাকে ঘটনা খুলে বললে তার বাবা জামিল মিয়া স্থানীয়ভাবে এ ঘটনার বিচার চাইতে গেলে বখাটে প্রান্ত ও তার পরিবারের লোকজনরা উল্টো তাকে ও তার মেয়েকে হত্যার হুমকি দেয়। একপর্যায়ে প্রান্ত আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে মেয়েটির ওপর। মেয়েটিকে হত্যার হুমকি ও নানা লোভ দেখিয়ে জোরপূর্বক তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কও গড়ে তুলে।

এদিকে প্রান্ত ও তার পরিবারের সদস্যরা গত ২৪ মে রাতে প্রিয়াদের বাড়িতে গিয়ে পাঁচ লাখ টাকার যৌতুকসহ প্রিয়াকে জোর করে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু জামিল মিয়া তার মেয়েকে ওই বখাটে যুবকের সঙ্গে বিয়ে দিতে রাজি না হলে প্রিয়াকে অপহরণ করে ধর্ষণের পর হত্যার হুমকি দিয়ে যায়। এর কয়েকদিন পর ৩০ মে রাতে প্রিয়া আক্তার প্রকৃতির ডাকে ঘরের বাইরে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পাওয়া যায়নি। পরদিন ৩১ মে দিবাগত রাত ২টার দিকে বাড়ির কাছেই স্থানীয় মজনু মিয়ার ধানক্ষেতের আইলে মুখে বিষের গন্ধসহ অর্ধমৃত অবস্থায় প্রিয়াকে উদ্ধার করে প্রথমে মাদারগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতেই তাকে জামালপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ১ জুন ভোর পাঁচটার দিকে প্রিয়া মারা যায়।

খবর পেয়ে জামালপুর সদর থানা পুলিশ জামালপুর সদর হাসপাতালে গিয়ে প্রিয়ার মরদেহের সুরতহাল লিখে নেয় এবং ময়নাতদন্ত করার পর মরদেহ হস্তান্তর করলে বাড়িতে নিয়ে প্রিয়াকে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় প্রিয়ার বাবা জামিল মিয়া বাদী হয়ে ১ জুন মামলা দায়েরের উদ্দেশে প্রিয়াকে উত্ত্যক্তকারী প্রান্ত মিয়া ও তার বাবা ইসরাফিল হোসেন বাবলুসহ পাঁচ জনকে আসামি করে মাদারগঞ্জ মডেল থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেন। মেয়েকে বিয়ে না দেয়ায় উত্ত্যক্তকারী প্রান্ত ও তার পরিবারের সদস্যরা প্রিয়াকে অপহরণ করে তাকে বিষ দিয়ে হত্যার পর ধান ক্ষেতে আইলে ফেলে রেখে ঘটনা ভিন্ন খাতে নেয়ার চেষ্টা করে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন তিনি।

প্রিয়ার বাবার অভিযোগ, তার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করার সেই অভিযোগটি আমলে নেয়নি মাদারগঞ্জ থানা পুলিশ। তিনি এ ঘটনায় দাখিল করা তার অভিযোগটি মামলা হিসেবে রুজু করে আসামিদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে মাদারগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, জামিল মিয়ার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে এমন কোনো অভিযোগ থানায় পাওয়া যায়নি। এছাড়া ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনও আমাদের হাতে আসেনি। প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পাশাপাশি মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দিলে বিষয়টিকে মামলা হিসেবে রুজু করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Check Also

জুলুম থেকে বাঁচতে মহানবী (সা.) যে দোয়া পড়তে বলেছেন

মহানবী (সা.) যেকোনো ধরনের জুলুম থেকে বাঁচতে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চেয়ে একটি দোয়া পড়তে বলেছেন। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *