নীলফামারীর ডোমারে চাঞ্চল্যকর জাকিরুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। গ্রেফতার হওয়ার পর নির্মম এই ঘটনায় জড়িত তিনজন আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন। এছাড়া জড়িত অপরজনকেও খুজছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৪ জুন) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান বিপিএম, পিপিএম।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন ডোমার ইউনিয়নের ছোটরাউতা গ্রামের আবিয়াতুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ রাশেদ (১৯), একই এলাকার ভুজারিপাড়ার আন্দারু বর্মণের ছেলে কমল কর্মকার(৩০) ও তরুলক্ষ কর্মকারের ছেলে রওশন (৩২)।
পুলিশ সুপার কার্যালয় সূত্র জানায়, গত ১০মে ডোমার উপজেলার বোড়াগাড়ি নালার খামার এলাকায় পরিত্যক্ত জমি থেকে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। চিকনমাটি ভাটিয়াপাড়া এলাকার আব্দুল গণি লাশটি শনাক্ত করে তার ছেলের(জাকিরুল) বলে নিশ্চিত করেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা করেন তিনি।
মামলার রহস্য উদঘাটনে পুলিশ সুপারের সরাসরি নির্দেশনা ও তদারকিতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের দুটি ও ডোমার থানার দুটি টিমের চেষ্টায় ছোটরাউতা এলাকার আবিয়াতুল ইসলামের ছেলে অটোরিকসা চালক মোহাম্মদ রাশেদকে গ্রেফতার করা হয়। অটোচালকের সহযোগিতায় পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয় কমল কর্মকার এবং রওশনকে।
জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান বলেন, ৭ মে রাতে জাকিরুলের সাথে নারী সংক্রান্ত বিষয়ে কমল, রওশন ও নিখিল নামে আরেক আসামীর সাথে তর্ক-বিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে তারা গলাটিপে হত্যা করে তার লাশ আদর্শ প্রাইমারী স্কুলের পিছনে বেতঝাড়ের মধ্যে রেখে যায়।
হত্যাকাণ্ডটি ভিন্ন খাতে প্রবাহের জন্য ৯ মে রাতে ডোমার বাজার থেকে রাশেদের অটোরিকশা নিয়ে লাশটি উঠিয়ে নালার খামার এলাকায় রেখে আসে।
পুলিশ সুপার বলেন, জাকিরুলের বিরুদ্ধে মোবাইল চুরি ও মাদক ব্যবসার সম্পর্ক থাকায় স্কুলের পিছন থেকে সাড়ে তিন কিলোমিটার দুরে লাশটি ফেলে আসে নিজেদের নিরাপদ রাখতে। জাকিরুলের মেলামেশা, চলাফেরা পর্যালোচনা করে আমরা অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে তদন্ত শেষে অটো-চালককে গ্রেফতার করি এবং কমল ও রওশনকে গ্রেফতারে সে সহযোগিতা করে। লাশ উদ্ধারের পর থেকেই পলাতক ছিলো অটো চালক।
এসপি বলেন, যেখানে লাশ পাওয়া গেছে সেখানে হত্যাকাণ্ড হওয়ার কথা নয় এটি অন্য কোথাও ঘটিয়ে এখানে ফেলে রাখা হয়েছে এজন্য পরিবহণ ব্যবহার করা হয়েছে। রহস্য উদঘাটনে ডিবি পুলিশ ও ডোমার থানা নৈশকালিন সকল অটো চার্জার রিকসা ভ্যান, ট্রাক্টরসহ প্রায় দুই’শ যানবাহনের মালিক ও চালককে দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নিয়ে ক্লুলেস তৈরির চেষ্টা করছিলো হত্যাকারীরা কিন্তু সেটি করতে পারেনি। এ ঘটনায় জড়িত পলাতক নিখিলকেও দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।
গ্রেফতার আসামীরা আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তাদের জেলা কারাগারে পাঠিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত।
পুলিশ সুপার কার্যালয় সূত্র জানায় মামলাটি রহস্য উদঘাটনে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জয়ব্রত পালে নেতৃত্বে কাজ করেন গোয়েন্দা পরিদর্শক কে এম আজমিরুজ্জামান, উপ-পরিদর্শক রেজানুর রহমান, ডোমার থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান, পরিদর্শক বিশ্বদেব রায় ও উপ-পরিদর্শক আজম হোসেন।