সিরাজগঞ্জে চাঞ্চল্যকর মা ও দুই সন্তান হত্যার রহস্য উন্মোচন হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যাকারীকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। এসময় হত্যাকান্ডে ব্যাবহৃত শিল পাথরসহ আলামত উদ্ধার করা হয়।সোমবার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল।গ্রেফতারকৃত হত্যাকারী আইয়ুব আলী জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার মোকছেদ মোল্লার ছেলে।
সে সম্পর্কে নিহত রওশন আরার সৎ ভাগ্নে।পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল জানান, গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে হত্যাকারী আইয়ুব আলী জেলার বেলকুচি উপজেলার মবুপুর গ্রামে তার সৎ খালা রওশন আরার বাড়িতে আসে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণ করা তাত শ্রমিক আইয়ুব আলী নিহত রওশন আরার নিকট টাকা ধার চান। ধার না পেয়ে গভীর রাতে রওশন আরার ঘরে থাকা চারটি ট্রাংক খুলে টাকা চুরির জন্য খোঁজাখুঁজি করার সময় রওশন আরা ঘুমের মধ্যে নড়ে ওঠে।রওশন আরা চুরির বিষয়টি বুঝতে পেরেছে ধারণা করে তার বুকে শিল পাথর দিয়ে আঘাত করে ঘাতক।
এরপর গলাটিপে তাকে হত্যা করে। রওশন আরার পাশে ঘুমিয়ে থাকা তার তিন বছরের শিশু সন্তান মাহিন কান্নাকাটি শুরু করলে তাকেও গলাটিপে হত্যা করে আইয়ুব। এসময় রওশন আরার অপর সন্তান জিহাদ জেগে উঠলে তাকেও গলাটিপে হত্যা করে ঘরের বাইরে শিকল লাগিয়ে পালিয়ে যায় ঘাতক আইয়ুব।পুলিশ সুপার আরো জানান, ঘটনার তিনদিন পর ১লা অক্টোবর বিকেলে নিজ ঘর থেকে সুলতান আলীর স্ত্রী রওশন আরা, তার দুই শিশু সন্তান মাহিন ও জিহাদের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঐদিন রাতেই নিহতের ভাই নুরুজ্জামান বাদি হয়ে বেলকুচি থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।মামলা দায়েরের পর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও বেলকুচি থানা পুলিশ চাঞ্চল্যকর ট্রিপল মার্ডার মামলার রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করে।
তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাবহারের মাধ্যমে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো: জুলহাজ উদ্দিন, উপ-পরিদর্শক ওয়াদুদ আলী ও সহকারি উপ-পরিদর্শক মো: মিন্টু মিয়া এর নেতৃত্বে একটি টিম রবিবার দিনগত রাত সোয়া বারটার দিকে জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার নন্দিগাতি গ্রাম থেকে মুল হত্যাকারী আইয়ুব আলীকে গ্রেফতার করে।
পরে তার দেয়া স্বীকারোক্তি ও তথ্যের ভিত্তিতে আলামত উদ্ধার করা হয়।পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) জানান, ঘাতক আইয়ুব আলীকে আদালতে প্রেরণের প্রক্রিয়া চলছে।সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) সামিউল ইসলাম, বেলকুচি সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার সিদ্দিক আহম্মেদ, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ জাকারিয়া হোসেন, বেলকুচি থানার অফিসার ইনচার্জ তাজমিলুর রহমান ও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ন কবির।