টিকা নিতে গিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের এক সেবিকাকে যৌন হয়রানির অভিযোগে এক ছাত্রকে ১ বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।বহিষ্কৃত ছাত্র মামুনুর রশীদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।এর আগে গত ৪ জুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রের এই ঘটনায় ঐ শিক্ষার্থী তার বিরুদ্ধে অভিযোগ “অকপটে স্বীকার” করেন গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে।
সোমবার (২২ আগস্ট) বিশ্বিবদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (কাউন্সিল) ড. বি এম কামরুজ্জামান সাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘Sexual Harassment Complaint Committee- এর প্রতিবেদন পর্যালোচনাপূর্বক তদন্ত কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ৪৬ – তম ব্যাচের ছাত্র মো . মামুনুর রশীদকে সিন্ডিকেটের তারিখ অর্থাৎ ২১-০৭-২০২২ তারিখ অপরাহ্ন হতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম হতে ১ ( এক ) বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।’এ সময়কালে বহিষ্কারকৃত শিক্ষার্থী হলে অবস্থান করতে ও কোনো প্রকার শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবে না বলে জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে। এছাড়া বহিস্কারকালীন মেয়াদে অভিযুক্ত জনাব মো. মামুনুর রশীদের মানসিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতার লক্ষ্যে যথাযথ সহায়তা প্রদানের জন্য তার পরিবারের প্রতি অনুরোধ করা হয় এবং মো . মামুনুর রশীদের মানসিক স্বাস্থ্য বিপর্যস্থ হয় / অবনতি হয় এমন কোনো বাক্য বা সংলাপ বা আচরণ করা হতে সকলকে বিব্রত থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়।
এর আগে গত ৪ জুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রের ঘটনায় প্রক্টর বরাবর অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী নার্স। অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, ‘মামুনুর রশীদকে ইনজেকশন দেওয়ার সময় আমার শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। ওই সময় আমি চিৎকার করলে আমার সহকর্মীরা ডিউটি রুমে এসে উপস্থিত হয়। উক্ত ছাত্র তখন সরে দাঁড়ায়। এ ঘটনায় আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। আমার ওপর সংঘটিত এই যৌন হয়রানির সুষ্ঠু বিচার কামনা করছি।’
এ বিষয়ে জানতে সেসময় অভিযুক্ত মামুনুরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দায় স্বীকার করে বলেন, “এটা আমি ইচ্ছা করেই করেছি।”ঘটনার পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের এক চিকিৎসক জানান, শনিবার সকাল ৯টার দিকে শহীদ সালাম বরকত হলের আবাসিক ছাত্র মামুনুর রেবিস ভ্যাকসিন নিতে যান। এ সময় সেখানে কর্মরত নার্স তাকে ভ্যাকসিন দিতে গেলে মামুনুর তাকে যৌন হয়রানি করেন।
প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিভাগের সহযোগী শিক্ষক সুব্রত বণিক বলেন দাবি, মামুনুর ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’।তিনি বলেন,“মামুনুরের রুমমেট ও হল কর্তপক্ষ জানিয়েছে যে, সে গত তিন চারদিন ধরে ‘অস্বাভাবিক আচরণ’ করছে। কয়েকদিন ধরে তাকে নার্সিং করা হচ্ছে।“এ ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতি মেডিকেলের সামনে বিক্ষোভ করে এবং সেদিন সকাল ১০টা থেকে দুই ঘণ্টা মেডিকেল তালাবদ্ধ করে রাখে।