নরসিংদী সদর উপজেলার মাধবদীতে তুচ্ছ বিষয়ে তর্কাতর্কির জেরে এক কিশোরকে কুপিয়ে খুন করেছে স্থানীয় একদল কিশোর গ্যাং।
রোববার (১৩ নভেম্বর) মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রকিবুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে শনিবার (১২ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে মাধবদীর দক্ষিণ বিরামপুর এলাকার আওয়াল মোল্লার চায়ের দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তি নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলার সাতগ্রাম ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে মোবারক হোসেন ওরফে শাহ আলম (১৭)। তিনি মাধবদীর এসপি ইনস্টিটিউশনের ছাত্র হিসেবে সদ্য সমাপ্ত এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।
নিহতের স্বজনরা বলছেন, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় মোবারক হোসেন ওরফে শাহ আলম বাড়ি থেকে বেরিয়ে আওয়াল মোল্লার চায়ের দোকানের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় তিনি থুতু ফেললে ইয়াসিন নামের এক কিশোরের পায়ের সামনে গিয়ে পড়ে। এতে ইয়াসিন ও মোবারক উত্তেজিত হয়ে উঠলে তাদের মধ্যে তর্কাতর্কি ও হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে সেখান থেকে মোবারক চলে যান। এর জের ধরে শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ইয়াসিনসহ ১০ থেকে ১২ জন কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য ওই চায়ের দোকানের সামনে ওঁৎ পেতে থাকেন। এ সময় চায়ের দোকানটির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় মোবারকের ওপর করে তারা। একপর্যায়ে তারা চাপাতি, ছুরি ও দা দিয়ে তাকে উপর্যুপরি আঘাত করতে শুরু করেন। এতে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পেয়ে মোবারক মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে তাকে ওই অবস্থায় ফেলে রেখে তারা পালিয়ে যান। সেখানে অবস্থানরত শত শত লোকের চোখের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে মাধবদীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসকরা ওই সময় তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। নিহতের স্বজনরা অ্যাম্বুলেন্সে করে শনিবার রাত ১০টার দিকে তাকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিলে সেখানকার জরুরি বিভাগে তার চিকিৎসা শুরু হয়। পরে রাত আনুমানিক ১২টার দিকে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত কিশোরের চাচাত ভাই সেলিম হোসেন জানান, ইয়াসিনসহ যারা আমার ভাইকে এত এত লোকের সামনে কুপিয়ে হত্যা করেছে, তারা প্রত্যেকেই স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। তাদের সবার বয়স ১৫ থেকে ১৭ এর মধ্যে হবে। পায়ের সামনে থুতু পড়ার মতো একটি তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে যারা তাকে হত্যা করেছে, আমরা তাদের বিচার চাই।
এ বিষয়ে মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রকীবুজ্জামান জানান, এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। লিখিত অভিযোগটি যাচাইবাছাই শেষে মামলাও প্রক্রিয়াধীন। এরই মধ্যে পুলিশ অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত চারজনকে আটক করা হয়েছে। মামলা হওয়ার পর তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে।