রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি শাহিন শেখের বিরুদ্ধে তিন সন্তানের জননীকে ফুসলিয়ে ভাগিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে এরই মধ্যে মামলা হয়েছে বলে জানা গেছে।
মা ছাড়া ওই তিন শিশু অনবরত কান্নাকাটি করছে। অবুঝ মেয়ে শিশুদের নিয়ে অসহায় বাবা বিপাকে পড়েছেন। নিরুপায় হয়ে রোববার দুপুরে শাহিন শেখ ও তার দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযুক্ত শাহিন শেখ দৌলতদিয়া ফেলু মোল্লা পাড়ার মৃত আক্কাছ শেখের ছেলে। এর আগে তিনি একাধিক বিয়ে ও তালাক দিয়েছেন।
বর্তমান ঘটনায় একই গ্রামের আকবর সরদারের ছেলে হারেজ সরদার ও জনৈক জিয়া শাহিন শেখের সহযোগী ছিল বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। অভিযোগে বলা হয়, গত শনিবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে দৌলতদিয়া বাজার এলাকা থেকে তার স্ত্রীকে ফুসলিয়ে নেয়া হয়। তিন সন্তানের ওই জননী স্থানীয় এক প্রাইভেটকার চালকের স্ত্রী।
আলাপকালে ভুক্তভোগী ওই স্বামী জানান, ‘শাহিন শেখ তার স্ত্রীকে বিভিন্ন সময় ভালবাসার প্রস্তাবসহ কু-প্রস্তাব দিতেন। আমাকে জানানোর পর আমি তার প্রতিবাদ করায় আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন শাহিন। দলীয় পদ-পদবি থাকায় তিনি এলাকায় প্রচণ্ড দাপট দেখিয়ে চলেন। মাদককারবারি, নিজে মাদক সেবন ও অন্যান্য মাদককারবারিদের থেকে তিনি দলের পরিচয়ে নিয়মিত বখরা আদায় করে থাকেন।’
তিনি বলেন, ‘শনিবার বিকেল ৫টার দিকে আমার স্ত্রী বাড়ির সামনে ফুসকা খেতে গেলে শাহিন শেখ ও তার দুই সহযোগী তাকে ফুসলিয়ে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে যান। শাহিন শেখ আমার স্ত্রীকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে এবং তার নিকট থেকে দেড় লাখ টাকা, স্বর্ণের কানের দুল, চেইন ও চুড়ি নিয়ে গেছে। আমি যোগাযোগ করলে, ওইদিন রাত ৯টার দিকে শাহিন তার মোবাইল নাম্বার থেকে আমাকে ফোন করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং আমাকে খুনের হুমকি দেন। পরে শাহিন আমাকে এবং আমাদের তিন মেযেকে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে কাবিন নামায় জোরপূর্বক আমার স্ত্রীর স্বাক্ষর নিয়েছে বলে শুনেছি। কিন্তু আমার স্ত্রীর সাথে আমার কোনোরুপ ডিভোর্স হয়নি। আমি আমার স্ত্রীকে ফেরত চাই।’
আলাপকালে গৃহবধূর মা জানান, ‘শাহিন অনেক খারাপ ছেলে। সে একসময় পতিতালয়ের মধ্যে পড়ে থাকতো। সেখানকার মেয়েদের সাথে তার উঠাবসা ছিল। এখন সে দলে পদ পেয়ে যা ইচ্ছা তাই করছে। ভয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলতে চায় না। আমি মা হিসেবে আমার মেয়েকে ফেরত চাই। তা না হলে শাহিন আমার মেয়েকে শেষ করে ফেলবে।’
অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা শাহিন শেখ দাবি করেন, ‘চার থেকে পাঁচ মাস আগে আমার নববধূ ও তার আগের স্বামীর মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়েছে। আমি তাকে ভালোবেসে নিয়ে এসে বিয়ে করেছি। কোনো অন্যায়-অপরাধ করিনি। এখন নতুন স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় আছি। শিগগরই এলাকায় ফিরব। আমার বিরুদ্ধে হুমকি-ধামকি ও মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ সঠিক নয়।‘
গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, ভুক্তভোগী স্বামীর লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগও শোনা যাচ্ছে।