থানার আঙিনায় খেলা করছিল ৫ বছরের নুশরাত জাহান ও সাড়ে ৩ বছরের ইশরাত জাহান। পাশেই সিএনজি অটোরিকশায় পড়ে আছে পিতার লাশ। দুই শিশু আপন মনে খেলাধুলা করলেও তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে স্বজন আর আশপাশের লোকজনের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় শেষ নেই। তারা শেষ আশ্রয়স্থল বাবাকেও হারালেন। তাদের অনিরাপদ ভবিষ্যতের কথা শুনে থানা আঙিনার মানুষেরও চোখ ভিজে যায়। রবিবার কুমিল্লার লাকসাম থানার আঙিনায় এ দৃশ্য দেখা যায়।
জানা গেছে, নিহত মনির গাজী বাড়ি কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামে। নিহতের মা আমেনা বেগম জানান, পেশায় সিএনজি অটোরিকশা চালক মনির শনিবার রাতে ঢাকা থেকে ফিরে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে ঘরের জানালা দিয়ে দেখা যায় সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস লাগানো মরদেহ ঝুলে আছে। পুলিশ রবিবার মনিরের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
নিহতের বড়ভাই আমির হোসেন জানান, সাড়ে ৩ মাস আগে মনির গাজীর স্ত্রী সুরমা আক্তার (২৩) ২ শিশু সন্তানকে রেখে অন্যের সাথে চলে যান। তাকে ফেরাতে মনির নানাভাবে চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। মনিরের স্ত্রী সুরমা আমাদের এলাকার মিজান কবিরাজকে জানান- মনির হোসেন গাজীর মৃত্যু হয়েছে। মিজান কবিরাজ এ খবর জানতে গেলে ঘটনা জানাজানি হয়। ধারণা করছি- মনির ভিডিও কলে ছিলেন। স্ত্রীকে ফেরানোর জন্য ভয় দেখাতে গিয়ে সত্যিই সে আত্মহত্যা করে।
লাকসাম থানার উপ-পরিদর্শক ওমর ফারুক জানান, মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে। রিপোর্ট এলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এ ঘটনায় নিহতের মা আমেনা বেগম লাকসাম থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন।