Breaking News

অন্ধ মাকে রাস্তায় ফেলে গেলেন ছেলে, দায়িত্ব নিলেন ডিসি

নাটোরে শতবর্ষী অন্ধ মাকে রাতের আঁধারে রাস্তায় ফেলে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছেলের বিরুদ্ধে। গত বুধবার (২ নভেম্বর) সদর উপজেলার ছাতনী ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী মায়ের নাম তারা বানু। তিনি পাঁচ সন্তানের জননী।

এদিকে অসহায় বৃদ্ধা তারা বানুর দায়িত্ব নিয়েছেন নাটোরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) শামীম আহমেদ। শুক্রবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ডিসি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অন্ধ তারা বানু তিন ছেলে ও দুই মেয়ের জননী। তিন ছেলের নিজস্ব বাড়ি ও জমিজমা থাকার পরও তারা কেউ মায়ের দায়িত্ব না নিলে তিনি পাশের গ্রামে তার বড় মেয়ে রায়লা বেগমের বাড়িতে ওঠেন। বড় মেয়ে ও জামাইকে তার বয়স্ক ভাতার টাকা দেওয়ায় রেগে যান ছোট দুই ছেলে ও বড় ছেলের ঘরের দুই নাতি। সবাই বয়স্ক ভাতার সমান ভাগ পেতে পর্যায়ক্রমে মাকে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। অক্টোবর মাসে তারা বানু ছিলেন ছোট ছেলে আজাদের সংসারে। নভেম্বর মাসের দুই তারিখ পার হয়ে গেলেও বড় ছেলে মাকে নিতে না যাওয়ায় বুধবার রাতে আজাদ তার অন্ধ মাকে রাস্তায় ফেলে যান।

পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসী তারা বানুকে বড় ছেলে মানিকের বাড়িতে দিয়ে আসলে তাকে রাতে বাড়ির গোয়ালঘরে থাকতে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে বৃদ্ধা তারা বানুর দায়িত্ব নেন জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ। তিনি সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জোবায়ের হাবিবকে শুক্রবার ওই বৃদ্ধার কাছে পাঠিয়ে তাকে তার মেয়ের বাড়িতে রেখে খাবারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করেন। এছাড়াও নগদ ৫ হাজার টাকা সহায়তা এবং শীতের কাপড়সহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিয়ে আসেন।

জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ ঢাকা পোস্টকে জানান, শতবর্ষী মাকে রাতের আঁধারে রাস্তায় ফেলে রেখে যাওয়ার বিষয়টি অবগত হওয়ার পর শুক্রবার সকালে সহকারী কমিশনার (ভূমি) জোবায়ের হাবিবের মাধ্যমে ওই বৃদ্ধার নিকট নগদ ৫ হাজার টাকা ও শীতের কাপড় পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। এছাড়া বৃদ্ধার জন্য প্রতিমাসে খাওয়া-পরা বাবদ প্রয়োজনীয় সকল জিনিসপত্র সরবরাহ করা হবে। ছেলেরা ওই বৃদ্ধার দায়িত্ব নিচ্ছে না। যেহেতু বৃদ্ধা তার মেয়ের কাছে থাকতে চান, সেজন্য তাকে দেখভালের জন্য মেয়ে রায়লা বেগমের কাছে রাখা হয়েছে। এখন থেকে মেয়েই মায়ের দেখাশোনা করবেন।

অন্যদিকে শুক্রবার ( ৪ নভেম্বর) দুপুরে এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে জেলা প্রশাসক একটি পোস্ট করেছেন। তিনি লিখেছেন, শতবর্ষী অন্ধ তারা বানুকে তার সন্তানেরা রাতের আঁধারে রাস্তায় ফেলে দেন। নাটোর জেলা প্রশাসন আন্তরিকতার সঙ্গে এই মায়ের যাবতীয় দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং মিডিয়ার প্রতিনিধিদের, যারা সংবাদ দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করেছেন।

Check Also

কন্যার ছিন্নভিন্ন দেহ কুড়াচ্ছিলেন মা

অনেক সাধনা। দীর্ঘ প্রতীক্ষা। সংসার পাতার আট বছর পর গিয়াস-রাবেয়া দম্পতির ঘরে জ্যোতি ছড়ায় রায়সা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *