মহাসড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধসহ কয়েকটি দাবিতে শুক্রবার সকাল থেকে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে মালিকদের সংগঠন রংপুর জেলা বাস মালিক সমিতি। এতে ভাগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। তারা অভিযোগ করছেন সরকারি বিআরটিসি বাসও বন্ধ রাখা হয়েছে।
বিএনপি দাবি করছে, অন্যান্য বিভাগীয় সমাবেশের মতো রংপুরের সমাবেশে বিঘ্ন ঘটাতে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) বাস বন্ধ থাকায় যাত্রীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
বিআরটিসির রাজশাহীর তালাইমারী কাউন্টার থেকে শুক্রবার সকালে টিকিটের টাকা ফেরত নিতে হয়েছে রবিউল ইসলাম নামে এক যাত্রীকে। সন্ধ্যায় তার বাস যাত্রা শুরুর কথা থাকলেও কাউন্টার থেকে সকালে টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়া হয়।
রবিউল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘রংপুরে বিএনপির কর্মসূচির কারণে অন্যান্য বাস বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু সরকারি বিআরটিসির বাস বন্ধ থাকবে কেন? এই গাড়ি চললে তো বিএনপি ভাঙবে না।’
নগরের কুমারপাড়া এলাকায় গিয়ে বিআরটিসির কাউন্টারে কোনো যাত্রী পাওয়া যায়নি। সেখানে শুধু দুটি বাস দাঁড় করানো ছিল।
ওই কাউন্টারের মাস্টার নজরুল ইসলাম বলেন, রংপুরে বাস চলবে না বলে তিনি ১০ থেকে ১৫টি টিকিটের টাকা ফেরত দিয়েছেন। বাসের ক্ষতি হতে পারে, এমন আশঙ্কায় বিআরটিসি থেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ জন্য তিনি টিকিটের টাকা ফেরত দিয়েছেন।
বিআরটিসির রংপুর বাস ডিপোর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. গোলাম ফারুক বলেন, গাড়ি যাচ্ছে না বলা যাবে না। তারা সকালে গাড়ি ছেড়ে দিয়েছিলেন। রাস্তায় একটু সমস্যা হচ্ছে। রংপুরে মালিক সমিতি ধর্মঘট ডাকছে। তারা কিছু বাধার সৃষ্টি করছেন। যে কারণে যাত্রী ও সরকারের সম্পদের কথা ভেবে তারা বাস চালাচ্ছেন না। শুধু রাজশাহীতেই নয়, মূলত স্টার্টিং পয়েন্টগুলোতেই ঝামেলা হচ্ছে।
পঞ্চগড় প্রতিনিধি জানান, শুক্রবার সকাল থেকে পঞ্চগড়-রংপুর সরাসরি রুটে বিআরটিসিসহ সব বাস বন্ধ রয়েছে। তবে অন্যান্য রুটে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। আন্তজেলার ছয় রুটে বাস মিনিবাসসহ সব ধরনের যানবাহন চলছে।
মোটর মালিক সমিতি ও পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন নেতারা জানান, পঞ্চগড় থেকে রংপুর-বগুড়াসহ বিভিন্ন রুটে ৩০ থেকে ৩২টি বিআরটিসির গাড়ি নিয়মিত চলাচল করে। রংপুরে পরিবহন ধর্মঘটের কারণে এসব গাড়ি শুক্রবার সকাল থেকে বন্ধ রয়েছে। পঞ্চগড়-রংপুর রুটে বিআরটিসিসহ অন্য যানবাহনও চলাচল বন্ধ রয়েছে।
আমাদের দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান, বিআরটিসি ডিপোর প্রকৌশলী জাহিদ হোসেন শুক্রবার রাতে দেশ রূপান্তরকে বলেন, সারাদিন বিআরটিসি বাস চলাচল করতে পারেনি। আমরা চেষ্টা করেছিলাম। তবে ধর্মঘট আহ্বানকারী পরিবহন শ্রমিকরা বাধা দেয়। রাষ্ট্রীয় সম্পদের যেন কোনো ক্ষতি না হয় সে জন্য বিআরটিসি বাস আর রাস্তায় নামানো হয়নি।