‘বন্যায় মরতে যদি হয়, তবে আশ্রয় কেন্দ্রে ক্যান, শেখ হাসিনার উপহারের ঘরে বসেই মরবো’- এমন উক্তি করেছেন পিরোজপুরের বিভিন্ন আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসকারী উপকারভোগী বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা।
ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ পরবর্তী বুধবার পিরোজপুরের পাড়েরহাট ও চারাখালী আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসকারী উপকারভোগীদের সঙ্গে কথা বলতে সেখানে গেলে যুগান্তরকে ক্যামেরার সামনে এভাবেই তাদের মনোভাব প্রকাশ করেছেন।
এখানের এ দুটি আশ্রয়ণ প্রকল্পে অন্তত ২৮০টি পরিবারের বসবাস। এখানের বাসিন্দারা মূলত নদী ও সাগরের মৎস্য আহরণ করে জীবন-জীবিকা ধারণ করে থাকেন। আবার কেউ কেউ রিকশা-ভ্যান ও দিনমজুর এবং কৃষি কাজের সঙ্গে জড়িত। ‘দিন আনে দিন খায়’- এমনি তাদের নিত্য দিনের চিত্র।
পাড়েরহাট আশ্রয়ণ প্রকল্পের সম্মুখেই রয়েছে স্পেন সরকারের উপহার দেওয়া একটি সাইক্লোন শেল্টার। কচা নদীর তীরে অবস্থিত এখানের বৃদ্ধ-বৃদ্ধাসহ অনেকেই সিত্রাংয়ের সেই রাতে সাইক্লোন শেল্টারে যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।
এখানে বসবাসরত রাজমিস্ত্রি মো. জনি, গৃহিণী রোজী আক্তার, জেলে বাবুলসহ অনেকেই জানান, তারা কচা নদীর তীরেই থাকেন। শুধুমাত্র ভয় ছিল জলোচ্ছ্বাসের, কিন্তু বর্ষার পানি ছাড়া তাদের তেমন কোনো সমস্যা হয়নি এবং জলোচ্ছ্বাসও হয়নি।
এদিকে বলেশ্বর নদীর তীরে চারাখালী আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা স্বপন হাওলাদারসহ অনেকেই জানান, বাতাসের যে গতিবেগ ছিল তাতে তারা অনেকেই প্রস্তুত ছিলেন। ঝড়ের গতিবেগ বাড়লে কাছেই থাকা আশ্রয় কেন্দ্রে সহজেই যেতে পারবেন তারা। তবে কিছু বৃদ্ধ ও বৃদ্ধাদের তারা সন্ধ্যার আগেভাগেই স্থানীয় রেজিস্ট্রি অফিসে নিয়ে গেছেন।
আশ্রিতারা আরও বলেন, আগে মোরা পরের বাড়ি, গাছতলা, রাস্তাঘাটে কখনোবা অল্প টাকায় অন্যের ভাড়াটিয়া ঘরে থাকতাম। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদেরকে যে টিনশেড ঘর উপহার দিয়েছেন সেগুলো অনেক শক্ত ও মজবুত। এ কারণে আমরা সহজে ঘর ছেড়ে কোথাও যাই নাই। আর মরণ যদি আসেই তবে শেখ হাসিনার উপহারের ঘরে বসেই মরতে রাজি বলে জানান তারা।