নোয়াখালীর স্কুলছাত্রী তাসনিয়া হোসেন অদিতা হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে তার সাবেক গৃহশিক্ষক আবদুর রহিম রনি। শনিবার বিকেলে নোয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে সে এ জবানবন্দি দেয়। ভারতীয় সিরিয়াল ক্রাইম প্যাট্রল দেখে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে সে এ খুনের পরিকল্পনা করে।
শনিবার সন্ধ্যায় নোয়াখালী পুলিশ সুপার শহিদুল ইসলাম তাঁর কার্যালয়ের সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। পুলিশ সুপার বলেন, তাসনিয়াকে প্রাইভেট পড়াত রনি। রনি তাদের বাসায় আসা-যাওয়া করত। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে সে তাসনিয়াদের বাসার ওপরের তলায় প্রাইভেট পড়াতে যাওয়ার সময় তাদের বাসায় প্রবেশ করে। এ সময় তাসনিয়া বাসায় একা ছিল। রনি বাসায় ঢুকে প্রায় ৩০ মিনিট গল্পগুজব করে। একপর্যায়ে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় ধস্তাধস্তি করলে রনি ওড়না দিয়ে তাসনিয়ার হাত বেঁধে ধর্ষণের চেষ্টা করে। সে ঘটনাটি তার মাকে বলে দেওয়ার হুমকি দিলে রনি বালিশচাপা দিয়ে তাকে হত্যা করে।
পরে হত্যাকাণ্ড ভিন্ন খাতে নিতে রনি তাসনিয়াদের বাসার কাপড়চোপড় ও জিনিসপত্র এলোমেলো করে এবং উচ্চ শব্দে টেলিভিশন এবং বাথরুমের পানির কল ছেড়ে রাখে এবং ফুলস্পিডে ফ্যান ছেড়ে দিয়ে ঘরের দরজায় বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে চলে যায়। খুন শেষে সে তার কোচিং সেন্টারে গিয়ে অবস্থান করে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে থাকে।
সংবাদ সম্মেলনে তাসনিয়ার মা রাজিয়া সুলতানা ও তাঁর স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। খুনির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির কথা শুনে রাজিয়া কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি তাঁর মেয়ের হত্যাকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছেন।
মানববন্ধনে শিক্ষকের কান্না: এদিকে তাসনিয়া হত্যার প্রতিবাদ ও খুনিদের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন করেছে সদর উপজেলার বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থী ও এসএসসি পরীক্ষার্থীরা। তারা ঘাতকদের ফাঁসি ও কিশোর গ্যাং সদস্যদের গ্রেপ্তারের দাবি জানায়।