যুবদল নেতা ছেলেকে বাসায় না পেয়ে বাবাকে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে। পরে গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।
বুধবার (৭ ডিসেম্বর) রাত আনুমানিক সোয়া ১২টার দিকে রাজধানীর ওয়ারীর টিপু সুলতান রোডে এই ঘটনা ঘটে। নিহত এই ব্যক্তির নাম মিল্লাত (৬৮)। নিহতের ছেলে ফয়সাল মাহাবুব মিজু ওয়ারী থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক।
মিজুর অভিযোগ, ‘বুধবার রাত আনুমানিক সোয়া ১২টার দিকে ওয়ারী এলাকার আওয়ামী লীগ-যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের প্রায় শতাধিক নেতা-কর্মী দেশীয় অস্ত্রসহ টিপু সুলতান রোডের গোপী মোহন লেনে আমার বাসায় আমাকে খুঁজতে যায়। বাসায় আমার বাবা গেট খুলতেই শত শত মানুষ আমার ঘরে ঢুকে তল্লাশী শুরু করে। অবস্থা দেখে আমার চাচা শাহাদাৎ হোসেন এসে বাধা দিলে তাকে মারতে মারতে সেখান থেকে নিয়ে ওয়ারী থানায় দেয়। আমার চাচাকে মারতে দেখে আমার বাবা বাধা দিলে তারা আমার বাবাকে মেরে রক্তাক্ত করেন।’
প্রায় ২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বাসায় তাণ্ডব চালানো হয়েছে বলেও অভিযোগ মিজুর। এরপর আহতাবস্থায় তার বাবাকে রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলেও জানান ভুক্তভোগী মিজু। কাঁদত কাঁদতে এই প্রতিবেদককে নিহতের ছেলে যুবদল নেতা মিজু বলেন, ‘ভাই আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আমার বাবাকে পুলিশ প্রহরায় হত্যা করেছে, আমার চাচাকে পুলিশি প্রহরায় মেরে রক্তাক্তা করে ওয়ারী থানায় দিয়েছে। আমরা বিএনপির রাজনীতি করি, ভাই বিএনপির রাজনীতি করা অন্যায়? আমি বাসায় ছিলাম না, বাসায় আমাকে খুঁজতে পুলিশ যায় দেখে আমি বাসায় থাকি না।’
ঘটনা সম্পর্কে জানতে ওয়ারী থানায় যোগাযোগ করা হলে, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কবির হোসেন হাওলাদার বাংলাভিশনকে বলেন, গতকাল এক ব্যক্তি মারা গেছে শুনেছি, তবে তাকে পিটিয়ে মারা হয়নি। তার পরিবার থানাকে লিখিত দিয়েছে, তাদের ওপর কেউ হামলা করেনি এবং তাকে কেউ পিটিয়ে হত্যা করেনি।’
সেইসাথে, তার বাবা অসুস্থজনিত কারণে মারা গেছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
তবে, পুলিশের দাবি অস্বীকার করেন নিহতের ছেলে মিজু। বলেন, ‘পুলিশের পাহারায় তারা আমার বাসায় হামালা করেছে। আমারা বাবাকে পুলিশের পাহারায় মারা হয়েছে। আমরা মামলা করবো। রাতে বাসায় পুলিশ বাসায় ঢুকে আমার বাসায় মহিলাদের কাছ থেকে জোরপূর্বক লিখিত নিয়ে গেছে। সেখানে কী লেখা ছিল তা আমরা কেউ জানি না।’
সেই সঙ্গে মিজু বলেন,’আমার বাসার চারদিকে আশপাশের অনেকগুলো সিসি ক্যামেরা আছে, সেখানে আপানারা এসে চেক করলেই দেখতে পারবেন কারা কারা হামলা করেছে।’
তবে, ঘটনার প্রায় ১৫ ঘণ্টা পার হলেও এখনও থানায় কোনো মামলা বা হত্যার অভিযোগ আসেনি বা এই ঘটনায় কাউকে আটকও করা হয়নি। ময়নাতদন্তের জন্য মিল্লাত হোসেনের লাশ নেওয়া হয়েছে রাজধানীর মিডফোর্ড হাসপাতালে।
ei sobe Vote chor Sheikh Hasina kaj
আল্লাহ আপনিতো ন্যায় বিচারক ভালোমন্দের বিচার আপনার কাছেই দিলাম
ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় ইসলামের শিক্ষা
পবিত্র কোরআনের শিক্ষা হচ্ছে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে যদি নিজ পিতা-মাতার বিরুদ্ধেও স্বাক্ষ্য দিতে হয় তা যেন দেয়া হয়।
মহান আল্লাহ বলেন
হে মুমিনগণ, তোমরা ন্যায়ের উপর সুপ্রতিষ্ঠিত থাকবে আল্লাহর জন্য সাক্ষীরূপে। যদিও তা তোমাদের নিজদের কিংবা পিতা-মাতার অথবা নিকটাত্মীয়দের বিরুদ্ধে হয়। যদি সে বিত্তশালী হয় কিংবা দরিদ্র, তবে আল্লাহ উভয়ের ঘনিষ্ঠতর। সুতরাং ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে তোমরা প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না। আর যদি তোমরা ঘুরিয়ে- পেঁচিয়ে কথা বল কিংবা এড়িয়ে যাও তবে আল্লাহ তোমরা যা কর সে বিষয়ে সম্যক অবগত।
[সূরা আন-নিসা আয়াত ১৩৫]
এ আয়াতে শুধুমাত্র সুবিচারের কথাই স্পষ্ট করে তুলে ধরা হয় নি, বরং সুবিচার প্রতিষ্ঠার অপরিহার্য শর্তাবলীও উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন, শুধুমাত্র সুবিচার প্রতিষ্ঠাই নয়, বরং সুবিচারের পতাকাকেও সমুন্নত রাখতে হবে।
যেখানেই ন্যায়বিচার ভূলুণ্ঠিত হতে দেখা যাবে, সেখানে তা সমুন্নত করাতে সর্বশক্তি নিয়োগ করতে হবে। মামলায় কোন পক্ষের হার-জিতের জন্য সাক্ষ্য নয়, বরং শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্যই সাক্ষ্য দিতে হবে। কেননা, সত্যসাক্ষ্য ব্যতিরেকে সুবিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। সত্যসাক্ষ্য দিতে গিয়ে যদি নিজেদের স্বার্থে আঘাত লাগে অথবা নিজ পিতা-মাতার বা নিকটাত্মীয় পরিজনের প্রতিকূলেও যদি যায়, তবুও সত্যসাক্ষ্য দিতে হবে। ন্যায়বিচারের উচ্চ মানদণ্ড ছাড়া সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত হওয়া সম্ভব নয়। তাই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হলে একমাত্র সত্যকেই মাধ্যম বানাতে হবে।
অপর এক স্থানে বলা হয়েছে,
হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর জন্য ন্যায়ের সাথে সাক্ষদানকারী হিসেবে সদা দন্ডায়মান হও। কোন কওমের প্রতি শত্রুতা যেন তোমাদেরকে কোনভাবে প্ররোচিত না করে যে, তোমরা ইনসাফ করবে না। তোমরা ইনসাফ কর, তা তাকওয়ার নিকটতর এবং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় তোমরা যা কর, আল্লাহ সে বিষয়ে সবিশেষ অবহিত।
[সূরা আল মায়িদাহ আয়াত ৮]
ইসলাম একটি শান্তিপ্রিয় ধর্ম এবং এর শিক্ষা অত্যন্ত উচ্চাঙ্গের। ইসলামের শিক্ষাগুলোর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হলো সমাজ ও দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা।
আল্লাহপাকের পক্ষ পৃথিবীতে এ পর্যন্ত থেকে যত নবীর (আ.) আগমন ঘটেছে, তাদের প্রত্যেককে আল্লাহতায়ালা বিশেষ যেসব দায়িত্ব দিয়েছেন তার মধ্যে প্রধান দায়িত্ব হলো ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা। আল্লাহতায়ালার নির্দেশ অনুযায়ী সকল নবীই (আ.) দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করেছেন এবং এক্ষেত্রে সফলও হয়েছেন।
ইসলামে ন্যায়বিচারের শিক্ষা এমন এক অনিন্দসুন্দর শিক্ষা, যা ন্যায়পরায়ণ প্রত্যেক অমুসলিমও শুনে প্রশংসা না করে পারে না।
পৃথিবীতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত করাই মহানবীর (সা.) আগমণের উদ্দেশ্য এবং তিনি নিজ আমল দ্বারা সর্বত্র ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষমও হয়েছিলেন।
এছাড়া কেবল শ্রেষ্ঠ নবীর উম্মতের দাবি করার কোন মূল্য নেই, আমাদের কর্মের মাধ্যমে শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে হবে।
সর্বক্ষেত্রে আমরা যখন ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হব, তখনই আমরা আল্লাহর প্রেমিকও হতে পারব আর খায়রে উম্মত হিসেবে নিজদেরকে প্রকাশ করতে পারব এবং আল্লাহর দরবারে মুমিন হিসেবে বিবেচিত হব।
মহান আল্লাহ বলেন
কেবল তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, যারা মানুষের উপর যুলম করে এবং যমীনে অন্যায়ভাবে সীমালঙ্ঘন করে বেড়ায়। তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব।
[সূরা আশ-শুরা আয়াত ৪২]
এটার বিচার হবে ইনশাআল্লাহ
এর বিচার এক দিন হবে ইনশাল্লাহ।