Breaking News

ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদক দু’জনেই বিবাহিত, আছে সন্তানও

ফরিদপুরে ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদক বিবাহিত, আছে সন্তানও!
ফরিদপুরে সদর উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে সভাপতি হয়েছেন শাহীন আহমেদ সোহান এবং সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রানা।

কিন্তু এই দুই ছাত্রলীগ নেতার নামে অভিযোগ উঠেছে, দু’জনেই বিবাহিত এবং তাদের রয়েছে একটি করে সন্তানও। এছাড়া গঠিত কমিটিতে স্থান পেয়েছে কিছু বিতর্কিতরা। এ নিয়ে চলছে নানা সমালোচনা।
ছাত্রলীগের এ বিতর্কিত নতুন কমিটি ঘোষণা করার অভিযোগ এনে একটি প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের একাংশের কিছু নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে এ প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা বক্তব্য রাখেন।

এ সময় ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা তাদের বক্তব্যে বলেছেন, ফরিদপুর সদর উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটির সভাপতি সোহান ও সাধারণ সম্পাদক রানা বিবাহিত। এছাড়া সভাপতির এক বছরের একটি মেয়ে সন্তান ও সাধারণ সম্পাদকের চার বছরের একটা ছেলে সন্তান রয়েছে। যা ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী। তাই অবিলম্বে এ কমিটির বাতিল করা হোক।
এ প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সাদিকুর রহমান সবুজ, জেলা ছাত্রলীগের আরেক সহ-সভাপতি অমিয় সরকার, জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রিজন মোল্যা, সদ্য বিলুপ্ত ঘোষণা করা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আশিকুর রহমান বিপ্লব, সরকারি ইয়াসিন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মশিউর রহমান সুপ্ত প্রমুখ।
ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের ৫-এর (গ) ধারায় আছে, বিবাহিত ব্যক্তি ছাত্রলীগের কমিটিতে স্থান পাবেন না। এরপরও ফরিদপুর সদর উপজেলা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটিতে স্থান পেয়েছেন বিবাহিতরা- এমনটাই অভিযোগ ছাত্রলীগের একাংশের কিছু নেতাকর্মীদের। যে কারণে বিষয়টি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

সোমবার (২৬ জুলাই) জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তামজিদুল রশিদ চৌধুরী রিয়ান ও সাধারণ সম্পাদক মো. ফাহিম আহামেদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে ফরিদপুর সদর উপজেলা ছাত্রলীগের পাঁচ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটির মেয়াদ দেওয়া হয়েছে এক বছর।
জেলা ও পদবঞ্চিত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর একাংশের দাবি, নবগঠিত ফরিদপুর সদর উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটির সভাপতি শাহীন আহমেদ সোহানের স্ত্রীর নাম জেনিমি সুরাত জেনি (বিথী)। তার শ্বশুর বাড়ি ফরিদপুর সদর উপজেলার অম্বিকাপুর এলাকায়। তার শ্বশুরের নাম বিল্লাল শেখ। তার এক বছরের একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে।

তবে এসব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে নতুন সদর উপজেলা কমিটির সভাপতি শাহীন আহমেদ সোহান বাংলানিউজকে বলেন, আমার নামে ষড়যন্ত্র চলছে। আমিতো বিবাহিতই না; আর বাচ্চা থাকবে কীভাবে? এগুলো আমার নামে অপপ্রচার চালাচ্ছে পদবঞ্চিত একটি গ্রুপ। প্রত্যেকটি বিবাহের নিবন্ধন থাকে। এগুলো যাচাই না করেই মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে।
সোহান আরও বলেন, আগের কমিটি ঘোষণার পর থেকে তার মেয়াদ হয়েছিল নয় বছর। সেই কমিটিতে আমি সেক্রেটারি ছিলাম। আর, নয় বছরতো একটি কমিটির মেয়াদ থাকতে পারে না। তাই, আগের কমিটি ভেঙে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সঙ্গে কথা বলে নতুন কমিটি ঘোষণা করেছে জেলা ছাত্রলীগ।

অন্যদিকে, একই কমিটির সাধারণ সম্পাদক রানাও বিবাহিত বলে অভিযোগ উঠেছে। তার স্ত্রীর নাম আম্বিয়া। তার শ্বশুর বাড়িও ফরিদপুর সদর উপজেলার অম্বিকাপুর এলাকায়। তার আয়ান নামে চার বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
এ ব্যাপারে ঘোষিত নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক রানা সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে বাংলানিউজকে বলেন, আমি বিবাহিত! তবে যারা অভিযোগ তুলেছেন ;তারা প্রমাণ করুক। প্রমাণ দিতে পারলে অব্যাহতি নেব।
তিনি বলেন, আমিতো বিয়েই করিনি, তাহলে সন্তান হওয়ার তো প্রশ্নই আসে না। এসব ভিত্তিহীন কথাবার্তা।
এদিকে, গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে কমিটিতে স্থান দেওয়ায় অভিযোগ তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ঝড় তুলছে ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা ও পদবঞ্চিত ছাত্রের অভিযোগ, বিবাহিত সোহান সভাপতি ও বিবাহিত রানাকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। অবৈধভাবে বিতর্কিত ও অযোগ্যদের পদ দিয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি-সেক্রেটারি রিয়ান-ফাহিম। এভাবে সংগঠন চলে না।

এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তামজিদুল রশিদ চৌধুরী রিয়ান বাংলানিউজকে বলেন, এসব মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ। আমরা খোঁজ নিয়েই কমিটি দিয়েছি। কোনো বিবাহিত কেউ ছাত্রলীগে স্থান পাওয়ার সুযোগ নেই। তবে, এরকম কেউ কোনো প্রমাণ দিতে পারে; তবে সাংগঠনিকভাবে তাদের নামে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক বাংলানিউজকে বলেন, আমিও এরকম শুনেছি। তবে, যাচাই করে এখনও দেখিনি। যেহেতু বিষয়টি ছাত্রলীগের ইস্যু, সেহেতু বিষয়টি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ দেখবে। যদি তারা তদন্ত করে প্রমাণ পান তবে তারা গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।

Check Also

ক্ষমা চাইলেন ডা. মুরাদ

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সাধারণ ক্ষমার আবেদন করেছেন সাবেক তথ্য ও …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *