গত মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) টিকিটের দাবিতে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের রাস্তায় যখন হাজার হাজার প্রবাসী বিক্ষোভ করছে, ঠিক তখনই সৌদি এয়ারলাইন্সের অফিসে দেখা গেছে তালা। কারণ চারটি ফ্লাইটের সকল টিকিটই নাকি বিক্রি হয়ে গেছে। এয়ারলাইন্সের সিটি ম্যানেজারের দাবি, তাদের কিছুই করার নেই। তাহলে চারটি ফ্লাইটের মোট ১০৪০টি টিকিট গেলা কোথায়। কাওরান বাজার এয়ারলাইন্স অফিসে বিক্রি হয়েছে মাত্র ১২০টি টিকিট। বাকি টিকিট কারা কিনলেন? বাকি টিকিট বিক্রি হয়েছে চারগুন দামে কয়েকটি এজেন্সির নিকট। নিজেদের ভোগান্তির জন্য এই চক্রটিকেই দায়ী করছেন প্রবাসীরা।
প্রবাসীরা বলছেন, ১০৪০টি টিকিট বিক্রি করা হলেও আমরা টিকিটের জন্য সিরিয়াল দিয়েছি মাত্র ১২০জন। বাকি টিকিট ওরা দালালের নিকট বিক্রি করে দিয়েছে। দেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশনে এমন খবর প্রচার করেছে।
সৌদিয়া এয়ারলাইন্স টিকিট বিক্রি সংক্রান্ত সব কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করায় বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করছেন সৌদি আরব যেতে ইচ্ছুক কয়েকশ’ প্রবাসী। সাউদিয়ার রিটার্ন টিকিট সঙ্গে থাকলেও রিইস্যুর করতে পারেননি প্রবাসীরা। অনেকের ভিসার মেয়াদ শেষ হবে ৩০ সেপ্টেম্বর, উৎকণ্ঠায় রয়েছেন তারা। এখন কাজে ফিরতে না পারলে পথে বসতে হবে বলে অশঙ্কা প্রকাশ করছেন অনেকেই।
সৌদি আরব যেতে ইচ্ছুক প্রবাসীরা ফ্লাইটের দাবিতে বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে রমনা এলাকার ইস্কাটনে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় ঘেরাও করেছেন। এ সময় তাঁরা মন্ত্রণালয়ের সামনের সড়কে অবস্থান নেন।
সূত্র জানায়, ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ফ্লাইট শুরু করেছে সাউদিয়া এয়ারলাইন্স। ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চারটি ফ্লাইট রয়েছে এয়ারলাইন্সটির। স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতি ফ্লাইটে সর্বোচ্চ ২৬০ জন যাত্রী নিতে পারবে তারা। এদিকে, বিমান ১ অক্টোবরের আগে ফ্লাইট শুরু করার অনুমতি পায়নি। ফলে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সৌদি আরব ফিরতে পারছেন না ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়া এসব প্রবাসীরা।
আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলছেন না সাউদিয়ার কর্মকর্তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, আমি জানি না কতজনের ভিসার মেয়াদ ৩০ সেপ্টেম্বরে শেষ হবে। যদি ২০ হাজার লোক ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সৌদি যেতে চায় তাহলে ৭৬টি ফ্লাইটের প্রয়োজন। কিন্তু আমরা সপ্তাহে মাত্র ২টি ফ্লাইট পরিচালনা করছি এখন। আমাদের পক্ষে এতো লোককে টিকিট দেওয়া তো সম্ভব না। কিন্তু এটাই কাউকে বোঝানো যাচ্ছে না।
সাউদিয়ার এই কর্মবর্তা বলেন, এখানে সমস্যা সমাধানের জন্য যাদের ভিসা মেয়াদ শেষ হয়েছে, তাদের ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি বেশি জরুরি। একইসঙ্গে ফ্লাইটের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। কিন্তু সৌদি আরব ও বাংলাদেশ অনুমতি না দিলে এয়ারলাইন্সের পক্ষে ফ্লাইট বাড়ানো সম্ভব না।
বিমানের মহাব্যবস্থাপক (এমডি) প্রধান নির্বাহী (সিইও) মো. মোকাব্বির হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, বিমানকে আটটি ফ্লাইটের স্লট দিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ল্যান্ডিং পারমিশন দেয়নি। পারমিশন মিললেই ফ্লাইট চালু করতে পারব।