গাজীপুরের শ্রীপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের ঘটনায় হামলায় আহত ৬ মাসের সন্তান সম্ভবা এক নারী প্রসবের আট ঘণ্টা পর নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। ওই নারীও সংকটাপন্ন অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ঘটনায় নিহত নবজাতকের বাবা মো. হাছান রোববার শ্রীপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
অভিযুক্তরা হলেন- প্রতিবেশী মাইনুদ্দিনের ছেলে এমদাদ, আজাহার, এনামুল, লুতফর, আজাহারের ছেলে জাহিদুলসহ অজ্ঞাতনামা আরও কমপক্ষে তিনজন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের পাথারপাড় গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধে ২৯ জুন সোমবার সকাল ১০টার দিকে অভিযুক্তরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হাছানের বাড়ির লোকজনের ওপর হামলা করে। এ সময় হাছানের ৬ মাসের সন্তান সম্ভবা স্ত্রী সানজিদাকে টানা হেঁচড়া ও লাথি দিলে তিনি গুরুতর জখম হন। এসময় তাদের ডাকচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসতে দেখে হামলাকারীরা বাড়িতে লুটপাট চালিয়ে খুন জখমের হুমকি দিয়ে চলে যায়।
পরে আহতদের শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় সন্তান সম্ভবা নারীকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে ওই নারীকে ছাড়পত্র দেয়া হয়। পরে ৪ জুলাই শনিবার বিকাল ৪টার দিকে সন্তান সম্ভবা নারীর আবার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। পরে তাকে স্থানীয় মাওনা চৌরাস্তার একটি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে সেখানে অপরিণত সন্তান প্রসব করেন।
নবজাতক ও মা সংকটাপন্ন হওয়ায় চিকিৎসক ওই সময়ই তাদেরকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। তাদেরকে হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন রাখা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাত সোয়া ১১টার দিকে নবজাতকের মৃত্যু হয়।
মামলার বাদী হাছানের বোন শিরিন আক্তার জানান, হামলার পর থানায় অভিযোগ দেয়া হয়। ওই অভিযোগে শ্রীপুর থানার এসআই নাহিদ হাসান বুধবার জাহিদুলকে আটক করে। পথিমধ্যে অজ্ঞাত কারণে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। পরে নবজাতকের মৃত্যুর পর রোববার থানায় মামলা হয়।
এ ব্যাপারে এসআই নাহিদ হাসান বলেন, মামলা না হওয়ায় গ্রেফতার করা হয়নি। তবে অভিযুক্ত জাহিদুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। টাকার বিষয়ে তাদের সঙ্গে আমার কোনো কথাই হয়নি।
শ্রীপুর থানার ওসি খোন্দকার ইমাম হোসেন বলেন, আমি ২ জুলাই এ থানায় যোগদান করেছি। আগের ঘটনা আমি জানি না। যেদিন আমি জানতে পারছি, তখনই আমি মামলা নিয়েছি। আসামিদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।