নিজের সন্তানকে খুঁজে আনতে যায়নি বলে পাঁচ বছরের শিশু জান্নাতুল মাওয়াকে নিজের ওড়না ও কাপড়ের টুকরো দিয়ে হাত ও পা বেঁধে বাড়ির পাশের ডোবায় পানিয়ে চুবিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করার কথা স্বীকার করে পুলিশের কাছে ঘটনার বিবরণ দিলেন ঘাতক গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম।
জান্নাতুল মাওয়ার মা কাজল রেখা বাদী হয়ে রোববার দুপুরে শাহরাস্তি থানায় মামলা করেন। এ প্রেক্ষিতে চাঁদপুরের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে অপরাধের দায় স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত ফাতেমা বেগম।
শাহরাস্তি থানার ওসি মো: শাহআলম জানান, দীর্ঘ পাঁচ মাস পর ৬ জুন কাজল রেখার ঘরে ফের কাজ করতে যান গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম (২৫)। কাজের ফাঁকে সাথে নিয়ে আসা নিজের সন্তান আরাফাতকে (৫) খুঁজে পাচ্ছিলেন না তিনি। এ সময় নিজের সন্তানকে খুঁজে আনতে জান্নাতুল মাওয়াকে বলেন ফাতেমা। কিন্তু শিশুটি অন্যমনষ্ক থাকায় ক্ষুব্ধ হন তিনি। এতে কৌশলে জান্নাতুল মাওয়াকে বাড়ির বাইরে ডেকে নেন ফাতেমা বেগম। এ সময় পাশের ডোবার কাছে নিয়ে নিজের ওড়না ও কাপড়ের টুকরো দিয়ে শিশুটির হাত-পা বেঁধে ফেলেন। পরে ওই ডোবার পানিতে চুবিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেন জান্নাতুল মাওয়াকে।
ওসি আরো জানান, ফাতেমার শিশুসন্তান আরাফাত এমন দৃশ্য প্রত্যক্ষ করে। এই শিশুটিও পুলিশের কাছে হত্যার ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে। শাহরাস্তি থানা পুলিশের কাছে দেয়া প্রাথমিক বক্তব্যে অভিযুক্ত গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম জানিয়েছে, শিশু জান্নাতুলকে নির্মমভাবে হত্যা করেন তিনি।
এদিকে, আলোচিত এই হত্যাকান্ডের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোস্তফা কামাল রোববার দুপুরে চাঁদপুরের আদালতে অভিযুক্ত ফাতেমা বেগম ও তার শিশুসন্তান আরাফাতকে হাজির করেন। এ সময় অভিযুক্তের ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। পরে আদালতের বিজ্ঞ বিচারিকের নির্দেশে তাদের জেলা কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলা টামটা উত্তর ইউনিয়নের বলশিদ গ্রামের পুরান তালুকদার বাড়িতে শনিবার কাজল রেখার পাঁচ বছরের শিশু জান্নাতুল মাওয়াকে নির্মমভাবে হত্যা করে গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় ঘাতক গৃহকর্মী ফাতেমা বেগমকে আটক করে পুলিশ।