Breaking News

করোনায় মৃত্যু বেড়ে ৮৪৬, আক্রান্ত ৬৩ হাজার ২৬

বিশ্বে যখন মৃত্যু মিছিল তখন করোনায় বাংলাদেশেও দিনকে দিন বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ৩৫ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। ফলে ভাইরাসটিতে মোট ৮৪৬ জন মারা গেলেন। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরো ২ হাজার ৬৩৫ জন। ফলে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৩ হাজার ২৬ জন। ৫০টি পরীক্ষাগারে এসব পরীক্ষা করা হয়। মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১২,৪৮৬টি।

যারা শনাক্ত হয়েছে তার মধ্যে ৭১ শতাংশ পুরুষ, বাকিরা নারী।
শনিবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (মহাপরিচালকের দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। তিনি সবাইকে স্বাস্থ্য পরামর্শ মেনে ঘরে থাকার আহ্বান জানান। পাশাপাশি তিনি পুষ্টিকর খাবার গ্রহণেরও পরামর্শ দেন। একই সাথে যারা করোনার এই মহামারিতে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাদের ধন্যবাদ দেন নাসিমা।

বুলেটিনে ৫০টি ল্যাবের নমুনা পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে জানানো হয়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ১২হাজার ৯০৯টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১২ হাজার ৪৮৬টি। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো তিন লাখ ৮৪ হাজার ৮৫১টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও দুই হাজার ৬৩৫ জনের দেহে। ফলে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৬৩ হাজার ২৬ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৩৫ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হলো ৮৪৬ জনের। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৫২১ জন। ফলে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন মোট ১২ হাজার ৮০৪ জন।

নাসিমা সুলতানা বলেন, মারা যাওয়া ৩৫ জনের মধ্যে ২৮ জন পুরুষ এবং ৭ জন নারী। বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায় যায়, ৮১-৯০ বছরের মধ্যে একজন, ৭১-৮০ বছরের মধ্যে ৯ জন, ৬১-৭০ বছরের মধ্যে ৫ জন, ৪১-৫০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৫১-৬০ বছরের মধ্যে ১০ জন, ৩১-৪০ বছরের মধ্যে ২ জন, ২১-৩০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ১১-২০ বছরের ২ জন। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৮ জন, সিলেট বিভাগে ২ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩ জন এবং বরিশাল বিভাগে ২ জন। এদের মধ্যে হাসপাতালে ২৫ জন এবং বাসায় মারা গেছেন ৯ জন। আর মৃত অবস্থায় হাসপাতালে এসেছেন একজন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে পুরুষ ৭৭.০৬ শতাংশ এবং নারী ২২.৯ শতাংশ।

তিনি আরো বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৩১৪ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ৭ হাজার ১৬২ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৯৮ জন।, এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৩ হাজার ৯৪৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ১ হাজার ৭৮৯ জনকে। এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৯৯ হাজার ২২২ জনকে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড় পেয়েছেন ২ হাজার ৮১১ জন, এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ২ লাখ ৪২ হাজার ৯২৫ জন ছাড় পেয়েছেন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫৬ হাজার ২৯৭ জন।

এর আগে শুক্রবারের বুলেটিনে জানানো হয়, দেশে চব্বিশ ঘণ্টায় আরো ২৮২৮ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬০ হাজার ৩৯১ জন। এ সময়ের মধ্যে মারা গেছেন আরো ৩০ জন। সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা ৮১১।

শুক্রবারের ব্রিফিংয়ে আরো জানানো হয়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ১৪ হাজার ৬৪৫টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১৪ হাজার ৮৮টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো তিন লাখ ৭২ হাজার ৩৬৫টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও দুই হাজার ৮২৮ জন। ফলে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৬০ হাজার ৩৯১ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে আরও ৩০ জনের। ফলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৮১১ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ৬৪৩ জন। এ নিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ১২ হাজার ৮০৪ জনে।

দেশে ভাইরাসটিতে শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ২১ দশমিক ২০ শতাংশ, শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

মৃত ৩০ জনের মধ্যে ২৩ পুরুষ এবং ৭ জন নারী। তাদের মধ্যে ৩১ থেকে ৪০ বছরের তিনজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ৭ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১১ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ছয়জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের দুজন এবং আশি ঊর্ধ্ব একজন।

এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের রয়েছেন ১১ জন, চট্টগ্রামের বিভাগের ১২ জন, সিলেটে তিনজন, রাজশাহী দুজন, বরিশাল এবং রংপুর বিভাগে একজন করে মারা গেছেন। এদের মধ্যে হাসপাতালে মারা গেছেন ১৭ জন এবং আর বাড়িতে মারা গেছেন ১৩ জন।

প্রসঙ্গত, চীনের উহান থেকে বিস্তার শুরু করে গত চার মাসে বিশ্বের ২১২টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। চীনে করোনার প্রভাব কমলেও বিশ্বের অন্য কয়েকটি দেশে মহামারি রূপ নিয়েছে। এরই মধ্যে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৬৯ লাখ ছুঁই ছুঁই। মারা গেছেন তিন লাখ ৯৮ হাজারেরও বেশি মানুষ। তবে ৩৩ লাখ ৬১ হাজারেরও বেশি রোগী ইতিমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।

করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। এর লক্ষণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট। উপসর্গগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মত। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিন পর এমনিতেই সেরে যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে ডেকে আনতে পারে মৃত্যু।

Check Also

জুলুম থেকে বাঁচতে মহানবী (সা.) যে দোয়া পড়তে বলেছেন

মহানবী (সা.) যেকোনো ধরনের জুলুম থেকে বাঁচতে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চেয়ে একটি দোয়া পড়তে বলেছেন। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *