জ্বর নিয়ে ফ্যাক্টরিতে কাজ করেছেন ১০দিন। ঈদের ছুটিতে চলে আসেন বাড়িতে। করোনা ভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়ে পুনরায় কর্মস্থলে। এরপর তিনদিন কাজ করেছেন সহকর্মীদের সঙ্গে। অথচ রিপোর্ট আসার পর জানা গেল শ্রমিকের করোনা পজিটিভ। লকডাউন করা হয়নি তার বাড়ি, নেওয়া হয়নি পরিবারের অন্য সদস্যদের নমুনাও।
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় এমন ঘটনাকে ঘিরে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। স্থানীয়রা বলছেন, আক্রান্ত ব্যক্তি ফ্যাক্টরি ও নিজ বাড়িতে কার কার সঙ্গে মিশেছেন, সেটা খুঁজে বের করা প্রায় অসম্ভব। তার অবাধ চলাফেরার ফল হতে পারে ভয়াবহ। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মরতদের আরও দায়িত্বশীল হওয়ার দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।
আক্রান্ত ব্যক্তি শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জের ওলিপুরের একটি ফ্যাক্টরিতে। নবীগঞ্জ উপজেলার কামারগাঁও এলাকার বাসিন্দা।
করোনা আক্রান্ত ওই শ্রমিকের বাবা বাংলানিউজকে জানান, গেল ঈদুল ফিতরের প্রায় ১০দিন আগে কর্মস্থলে জ্বরে আক্রান্ত হন তার ছেলে। পরে সুস্থও হয়ে যান। পরবর্তীতে ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এসে থাকেন দুইদিন। গত ২৭ মে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। পরদিন চলে যান কর্মস্থলে। এরপর ৩১ মে থানা থেকে খবর আসে তার ছেলের করোনা পজিটিভ। পরে তিনি একটি গাড়িতে করে অন্যান্য যাত্রীদের সঙ্গে ফ্যাক্টরি থেকে বাড়িতে চলে আসেন। ওইদিন রাতেই প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন তাকে জেলা সদর হাসপাতালের আইসোলেশন সেন্টারে নিয়ে যান।
এদিকে পরিবারের অন্য সদস্যদের নমুনা নেয়নি স্বাস্থ্য বিভাগ। বাড়িটিও করা হয়নি লকডাউন। তবে যতটুকু সম্ভব পরিবারের লোকজন অন্যদের থেকে আলাদা থাকছেন বলেও জানিয়েছেন ওই শ্রমিকের বাবা।
নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিশ্বজিত কুমার পাল বাংলানিউজকে বলেন, নমুনা দিয়ে ওই শ্রমিক কর্মস্থলে চলে যান। রিপোর্টে করোনা পজিটিভ আসলে তাকে আইসোলেশনে আনা হয়। বাড়িটি লকডাউন করা হয়নি কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, খোঁজ নিয়ে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার আব্দুস সামাদ প্রথমে জানান, নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন নমুনা নেওয়া হয়নি এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, শিগগিরই নমুনা সংগ্রহ করা হবে।
তবে করোনা আক্রান্তে পর ওই শ্রমিক তিন দিন কর্মস্থলে থাকার কথা অস্বীকার করেছেন ওই ফ্যাক্টরির জেনারেল ম্যানেজার হাসান মো. মঞ্জুরুল হক। গত ২২ মের পর থেকে ওই শ্রমিক কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিল বলেও জানান তিনি। তবে আক্রান্ত ওই শ্রমিক কর্মস্থলে থাকার বিষয়ে দায় এড়াতে চাচ্ছে ফ্যাক্টরিটি। এমনটা বলেছেন প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা।