Breaking News

করোনা থেকে সুস্থ রোগী ‘বিলের জন্য’ আটকা হাসপাতালে

করোনাভাইরাসে চিকিৎসা শেষে বিলের জন্য রোগীকে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে রাজধানীর আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের বিরুদ্ধে। যদিও করোনার জন্য নির্ধারিত হাসপাতালে চিকিৎসা নিলে রোগীকে বিল দিতে হয় না, সরকারই সে বিল মেটায়।

করোনাভাইরাস থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা সাইফুল ইসলাম নামের এক রোগী অভিযোগ করেছেন, মঙ্গলবার বিকেলে চিকিৎসকের ছাড়পত্র মিললেও বিলের জন্য হাসপাতাল তাকে ছাড়ছে না।

এদিকে অতিরিক্ত স্বাস্থ্য সচিব হাবিবুর রহমান বলেছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের কাছ থেকে অর্থ নেয়ার সুযোগ নেই, কেননা এই বিল সরকার মেটাবে।

তবে এ বিষয়টিকে পাত্তা না দিয়ে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা ‘কোভিড ডেডিকেটেড’ হাসপাতাল হিসেবে আর নেই।

গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সাইফুল নামে ওই রোগী আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালেই আটকে ছিলেন। গত ২৩ মে হাসপাতালটিতে ভর্তি হয়েছিলেন মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকার বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী সাইফুল।

সাইফুল ইসলাম জানান, গত ২১ মে একটি বেসরকারি হাসপাতালে পরীক্ষায় তার করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে। হৃদস্পন্দন বেশি থাকায় ২৩ মে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি।

তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ এর চিকিৎসা ফ্রি করে দিয়েছে সরকার, এটা জেনে এখানে ভর্তি হয়েছিলাম, এখন অনেক বেশি টাকা দাবি করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।’

সাইফুল ইসলাম জানান, ভর্তি হওয়ার পর থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত তার রক্তের দুটি পরীক্ষা করেছে, তিনটি এক্স-রে করেছে। আর হাসপাতাল থেকে শুধু নাপা ট্যাবলেট সরবরাহ করেছে।

তিনি বলেন, ‘আমার কোনো অক্সিজেনেরও প্রয়োজন হয় নাই। কোনো অপারেশন লাগে নাই। কিন্তু এত টাকা বিল করে দিয়েছে। আমি এত টাকা এখন কোথা থেকে দেব।’

সাইফুল ইসলামের বিলে গেছে, ২ জুন পর্যন্ত চিকিৎসকের বিল ১৮ হাজার ৭০০ টাকা, হাসপাতাল বিল ১ লাখ ১৪ হাজার ৫৭০ টাকা, পরীক্ষার বিল ১৯ হাজার ৪৭৫ টাকা, ওষুধের বিল ৫ হাজার টাকা। আর এর সঙ্গে সার্ভিস চার্জ যোগ হয়েছে ১২ হাজার ৯০৩ টাকা।

সাইফুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে চিকিৎসক তাকে ছাড়পত্র দেন। কিন্তু টাকা দিতে না পারায় তাকে হাসপাতাল থেকে বের হতে দিচ্ছে না।

তিনি বলেন, ‘আমার তিনটার সময় যাওয়ার কথা। এখনও (রাত সাড়ে ১০টা) যেতে পারিনি। ওদের অ্যাডমিনের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছে হাসপাতাল ছাড়তে হলে টাকা দিতে হবে।’

আনোয়ার খান মর্ডান হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক এহতেশামুল হক জানান, মে মাসে সরকারের সঙ্গে তাদের চুক্তি শেষ হয়ে যাচ্ছে। তবে ওই রোগীকে কীভাবে ছাড় দেয়া যায়, তারা সে ব্যবস্থা করছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি হাসপাতালে বলে দিচ্ছি। আমাদের পক্ষ থেকে ওই রোগীর জন্য সর্বোচ্চ ছাড় দেয়া হবে।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমান খান বলেন, ‘কোভিড-১৯ নির্ধারিত হাসপাতালগুলোর বিল সরকার দেবে। এখানে রোগীদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলো কমপ্লিটলি ফ্রি। আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালেও চিকিৎসা ফ্রি।’

উল্লেখ্য, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন খান লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য। তিনি বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক।

Check Also

জুলুম থেকে বাঁচতে মহানবী (সা.) যে দোয়া পড়তে বলেছেন

মহানবী (সা.) যেকোনো ধরনের জুলুম থেকে বাঁচতে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চেয়ে একটি দোয়া পড়তে বলেছেন। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *