করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে দেশে লকডাউনের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে আড়াই হাজার টাকা করে ঈদ উপহার দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই প্রক্রিয়া ঈদুল ফিতরের আগে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করলেও বিভিন্ন এলাকায় অনিয়মের অভিযোগ উঠায় যাচাই-বাছাইয়ের কারণে অনেকেই এখনও তা পায়নি। তবে এই প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ঈদ উপহার অসহায় ও দরিদ্রদের তালিকা অনুযায়ী যার যার মোবাইল নাম্বারে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পৌঁছে যাচ্ছে সহজে। কিন্তু এই সুবিধাকে গরীবের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার হাতিয়ার বানিয়েছে অসাধু জনপ্রতিনিধি ও কতিপয় কর্মকর্তা।
প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়ন থেকে ১১৭১ জন কর্মহীন-অসহায়ের নামের তালিকা ও টাকা পাঠাতে মোবাইল নম্বর প্রেরণ করা হয়েছে৷ সেই তালিকার ৬৮৮ নম্বরে ইউনিয়নের পরমানন্দপুরের আব্দুল হামিমের ছেলে ৫০ বছর বয়সের বাছির মিয়ার নাম উল্লেখ করা থাকলেও উপহারের টাকা আসতে দেয়া মোবাইল নাম্বারের জায়গায় ইউপি সচিব আব্দুল কুদ্দুসের ০১৭১৬৮৯৩২২৭ নম্বরটি লেখা রয়েছে। ফলে প্রক্রিয়া অনুযায়ী নাম দিনমজুর বাছির মিয়ার থাকলেও উপহারের টাকা পাবেন পাকশিমুল ইউনিয়ন পরিষদ সচিব আব্দুল কুদ্দুস।
এই বিষয়ে ইউপি সচিব আব্দুল কুদ্দুসের সাথে তালিকায় দেওয়া নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘তালিকা প্রণয়নের প্রথম দিকে আমরা অনেকের নম্বর পাইনি। তখন আমাদের বলা হয়েছিল, যেকোন নম্বর বসিয়ে পাঠিয়ে দিতে। পরে সংশোধন করা হবে জানিয়েছিল। তখন আমার নম্বর হয়তো দিয়েছিলাম। এই নম্বরটি হয়তো ভুলে কোন মিসটেক হয়েছে।’
এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে পাকশিমুল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমি অবগত নই। তবে ভুলে তো একজনের নাম্বার হুবহু তার ইউপির তালিকায় যাওয়ার কথা না। ভুল হলে এক বা দুইটি নাম্বার ভুল হতে পারে কিন্তু নিজের অজান্তে কিভাবে একটি সরকারি তালিকায় মোবাইল নাম্বার যেতে পারে। আর যদি একজনের নিজের নাম্বার না থাকে, সেখানে প্রয়োজনে ওই ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের নাম্বার দিতে পারবে। এই তালিকা প্রণয়নের আগেই সবাইকে সচেতন করে দেয়া হয়েছিল, যেন কোন লুকোচুরি না করা হয়।’
এ বিষয়ে সরাইল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মোসা বলেন, ‘তালিকায় যদি আইডি কার্ডের সাথে নাম্বার না মিলে, তাহলে ওই নাম্বারে টাকা যাবে না। কিন্তু টাকা যাক আর না যাক, তার নাম্বারটি অসৎ উদ্দেশ্যে দেয়া হয়েছে। যদি তালিকায় সে (ইউপি সচিব) তার নাম্বার দিয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই বিষয়ে কোন ছাড় নয়।’