পুলিশ হেফাজতে কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভ থামাতে মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়েপোলিস শহরে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এক টুইট বার্তায় ট্রাম্প এমনটি বলেন।
টুইট বার্তায় ট্রাম্প বলেন, বিক্ষোভাকারীদের দমন করার জন্য মিনিয়েপোলিস শহরে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে খুব দ্রুত সেনা মোতায়েন করা হবে।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছে যে মিনিয়েপোলিস শহরের নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন থেকে সাহায্য চাইলেই সেনা মোতায়েন করা হবে।
কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার জেরে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। দেশটির ওয়াশিংটন, নিউ ইয়র্ক, পোর্টল্যান্ড, লস অ্যাঞ্জেলসসহ বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। । শনিবারও মার্কিন প্রেসিডেন্টের বাসভবন হোয়াইট হাউজ ঘেরাও করে রেখেছিলেন আন্দোলনকারীরা।
এই বিক্ষোভ থামাতে যুক্তরাষ্ট্রের ১৬টি রাজ্যের কমপক্ষে ২৫টি শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে। সর্বশেষ পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, মিনিয়েপোলিস পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছে। পুরো যুক্তরাষ্ট্রজুড়েই বিক্ষোভ ঠেকানোর জন্য এ পর্যন্ত বহু সংখ্যক আন্দোলনকারীকে আটক করেছে দেশটির পুলিশ।
বিক্ষোভের বিষয়ে শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের গভর্নর টিম ওয়ালজ বলেন, আন্দোলন শুধু ওই কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার ঘটনাতে আটকে নেই। আমাদের বড় শহর মিনিয়েপোলিস ও সেন্ট পলে হামলা চালানো হচ্ছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকেও দাবি করা হয়েছে যে রাজনৈতিক ইন্ধনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে সহিংসতা। এ বিষয়ে একটি বিবৃতিতে মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার বলেন, অনেক জায়গায় পরিকল্পিতভাবে সহিংসতা ঘটানো হচ্ছে। বামপন্থী উগ্র সংগঠনগুলোই এমন নৈরাজ্য তৈরি করছে।
এদিকে শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কৃষ্ণাঙ্গ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ফ্লয়েডের মৃত্যু আমেরিকানদের মধ্যে ভয়, ক্ষোভ এবং বেদনা দিয়ে পরিপূর্ণ করে দিয়েছে। তবে এই হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে যারা নৈরাজ্য করছে তাদের তীব্র সমালোচনা করেন ট্রাম্প। এছাড়া ট্রাম্প জানিয়ে দিয়েছেন যে কোন আন্দোলনকারী যদি হোয়াইট হাউজের সীমানা লঙ্ঘন করতে চায় তাহলে তাদেরকে কঠোরভাবে দমন করা হবে ।
এই সহিংসতার বিষয়ে আটলান্টা রাজ্যের জর্জিয়া শহরের মেয়র কেইশা ল্যান্স বোটোমস বলেন, এটা কোন আন্দোলন নয়। আপনারা জর্জ ফ্লয়েডকে অপমান করছেন।
২৫ মে মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের বড় শহর মিনিয়াপলিসে পুলিশের হাতে জর্জ ফ্লয়েড নামে এক কৃষ্ণাঙ্গ নির্মমভাবে নিহত হন। এরপরই শুরু হয় বিক্ষোভ।ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনায় চার পুলিশ কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্ত করে মিনিয়াপোলিস পুলিশ বিভাগ। এদের মধ্যে ফ্লয়েডের ঘাড়ে হাঁটু দিয়ে চেপে ধরা ৪৪ বছর বয়সী দেরেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ফ্লয়েডকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। সোমবার তাকে আদালতে হাজির করার কথা রয়েছে। বিবিসি,রয়টার্স, জেরুজালেম পোস্ট।