আমি মুনতাসির মামুনকে ১৯৭৪ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার সহকর্মী হিসাবে চিনি। তার সম্পর্কে যা জানি, লিখলে একটা মহা কাব্য হবে! সে আমার দু বছরের কনিষ্ঠ। ইতিহাস বিভাগ থেকে এম.এ. তে ২য় শ্রেণীতে ২৮ তম স্থান অধিকারী। তার সরকারী কলেজেও চাকুরী পাবার কথা নয়। কিন্তু চাঁদপুরর প্রয়াত আওয়ামী মন্ত্রী মিজানুর রহমান চৌধুরী ছিলেন সম্পর্কে তার নানা। আর তখন ঢ:বি:র উপাচার্য ছিলেন নব্য আওয়ামী মতিন চৌধুরী, যিনি পাকিস্তান আমলে আইয়ুব খানের ধামাধরা ছিলেন। যাক, মিজান-মতীন-দের দুর্নীতির কারনে ১৯৭৪ সালে মামুন সুই হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক হিসেবে ঢুকে পরল।
ইতোমধ্যে সে “বিশপ হেবারের চোখে ঢাকা” নামে একটা ইংরেজী বই বাংলায় অনুবাদ করে নিজের নামে চালিয়ে দিল। জ্ঞান চর্চার জগতে এটা তার প্রথম চুরি। এর এক বছর পরে ঘটল মুজিবের পতন। আর আমরা সবাই অবাক হয়ে দেখলাম এক নতুন মামুনের অভুধ্যয়! সে তখন এক প্রচন্ড আওয়ামী বিরোধী দেশপ্রেমিক। আমাদের সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাপী দলের একজন পাতি নেতা! আহমদ শরীফ, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ও মুনিরুজজামান মিয়াদের সাথে হরিহর আত্মা। জিয়াউর রহমানের সময় মামুন আর চাচা বোরহানউদদীন জাহাঙ্গীর তখন কট্টর বাকশাল বিরোধী প্রগতিশীল। আরেক চাচা মহিউদ্দীন খান আলমগীর তখন জিয়ার খালকাটা আন্দোলনের এক মহা সমর্থক! মখা এর মধ্যে বসটন ইউনিভার্সিটি থেকে খাল কাটার উপর পিএইচডি করে ফেলল। তখন আজকের প্রচন্ড মুজিববাদী ইতিহাস বিভাগের আরেক মহারথী সৈয়দ আনোয়ার হোসেন
প্রয়াত মুজিবকে স্বৈরাচার গণ্য করতেন।
এক কথায় মামুন একজন Fourth Classবা চতুর্থ শ্রেণীর ঐতিহাসিক। তার তথাকথিত পিএইচডি ডিগ্রির কথা আজ না হয় নাই বা বললাম! মামুন নাকি ৩০০ টি গ্রন্থ রচনা করেছে। আমার বা বিশ্বের যে কোন ঐতিহাসিকের এ কাজ করতে সময় লাগতো কমপক্ষে ৯০০ বছর! মামুনকে তো এই মহা অর্জনের জন্য কমপক্ষে এক ডজন নোবেল পুরস্কার দেয়া যেতে পারে। সে কথা থাক। আমি চাই না মামুন হঠাৎ করে , অনেকে যেটাকে “না ফেরার দেশ” বলে সেখানে যাক। সে আরো দশ বছর বেঁচে থাকলে আমাদের আরো ১০০ টি বই উপহার দেবে!
শেষ কথা: আমি তার মৃত্যুর পর তাকে গালাগাল করার ঘোর বিরোধী। আর আমি চাই না দেশদ্রোহী কারো বিচারের আগে পরপারে যাত্রা! এরশাদের মত আরো অনেকেই পার পেয়ে গেছে!
মুনতাসির মামুন বৃত্তান্ত
লেখক –তাজ হাশমী