Breaking News

গার্ডার চাপায় ৫ জনের প্রাণহানি: কর্তৃপক্ষের কোনো দায় পায়নি তদন্ত কমিটি

রাজধানীর উত্তরায় বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের কাজের সময় কংক্রিটের গার্ডার চাপায় পাঁচজনের প্রাণহানির ঘটনায় কর্তৃপক্ষের কোনো দায় নেই বলে জানিয়েছে তদন্ত কমিটি। দুর্ঘটনার জন্য মূল দায় দেয়া হয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে। একই ঘটনায় প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকেও আংশিকভাবে দায়ী করা হয়েছে। চুড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদনে দুর্ঘটনার জন্য ১২টি কারণও চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী।

রোববার বিকেলে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তদন্ত প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ তুলে ধরে তিনি বলেন, গত ১৫ই আগস্টের গার্ডার দুর্ঘটনার জন্য প্রকল্প কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়। তবে প্রকল্পের কাজ নিরাপত্তাসহ বাস্তবায়নের নিমিত্তে সার্বক্ষণিক মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার এবং প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের উপর অর্পিত দায়িত্ব সুচারুরূপে পালিত হচ্ছে কি না-তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন ছিল। দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে -সরকারি ছুটির দিনে কাউকে না জানিয়ে কাজ করেছে। প্রথমবার দিনের বেলায় গার্ডার স্থাপনের কাজ করা, অন্যদিন তারা রাতে কাজটি করতো। ক্রেনটি সহকারী দ্বারা পরিচালিত হয়েছে, ড্রাইভার থাকলে সেটি হতো না। ক্রেনটির লাইসেন্স ছিল না।

ক্রেনটি যেখানে চালানো হচ্ছিল সে জায়গা অসমতল ছিল। ক্রেনটির ডিজিটাল মনিটর ছিল না। কাজের পূর্বানুমতি ছিল না। ট্রাফিক ব্যবস্থা ছিল না, মূলত ট্রাফিককে জানাতে হয়। ট্রাফিক ম্যানেজমেন্টে যোগ্য লোক ছিল না, নিজেরা এসব লোক রেখেছিল। সেফটি ইঞ্জিনিয়ারের যথাযথ যোগ্যতা ছিল না। ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান ছিল না। সেজন্য গার্ডার সরাতেও সময় লেগেছে। ঠিকাদার হিসেবে যাদের দিয়ে কাজ করানো হয়েছিল তাদের কোনও অনুমোদন ছিল না। আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, রাজধানীর উত্তরায় নির্মাণাধীন বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ক্রেন ছিঁড়ে প্রাইভেটকারের ওপর পড়ে মানুষ নিহত হওয়ার ঘটনার পর প্রথমে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়। পরে সেটি বাড়িয়ে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট করা হয়। ওই কমিটি প্রাথমিক প্রতিবেদন দেয়।
এরপর বুয়েটের বিশেষজ্ঞকেও কমিটিতে যুক্ত করা হয়। তদন্ত করতে গিয়ে তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিসহ তারা সবার বক্তব্য নিয়েছেন। তিনি বলেন, তদন্ত কমিটি দুর্ঘটনার দায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দিয়েছে। ভিডিও ফুটেজে তার বিবরণ আছে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বলছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ৩৪টি পত্র প্রেরণ করেছে। কিন্তু পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সেটি মন্ত্রণালয়ে জানায়নি। তারা সেটি জানালে আমরা চাইনিজ কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারতাম। এর আগে গত ১৫ই আগস্ট রাজধানীর দক্ষিণখানে বৌভাতের অনুষ্ঠান শেষে আশুলিয়া যাওয়া পথে উত্তরার জসীমউদদীন এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ রোডে পৌঁছালে বিআরটি প্রকল্পের একটি ক্রেন থেকে গার্ডার প্রাইভেটকারের ওপর পড়ে। এতে ২ শিশুসহ ৫ জন নিহত ও ২ জন আহত হন।

Check Also

ইতালিতে হিজাব পরায় বাংলাদেশি নারীকে হেনস্তা, প্রতিবাদে বিক্ষোভ

সম্প্রতি ইতালিতে হিজাব পড়ায় এক বাংলাদেশি নারীকে হেনস্তার প্রতিবাদে দেশটিতে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মুসলিম। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *