Breaking News

প্রেমিক ও বন্ধুদের গণধ’র্ষণে মৃত্যু হয় লিপির, গ্রে’ফতার ৫

ময়মনসিংহের ভালুকায় গণধ’র্ষণের পর লিপি আক্তার নামে এক মিল শ্রমিককে হ’ত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ পাঁচ যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে দুইজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। শনিবার (২৩ মে) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, ভালুকা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইকবাল হোসেন। গত ১৯ মার্চ বিকেলে ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর পূর্ব পাশে বিলাইজোরা খালের সেতুর পাশে থেকে লিপি আক্তারের অর্ধগলিত লা’শ অজ্ঞাত অবস্থায় উদ্ধার করেছিলো পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, রকিবুল ইসলাম (১৯), হৃদয় মিয়া (১৮), জয়নাল (২০), মামুন (১৮) ও রাব্বি (২২)। এদের মধ্যে হৃদয়ের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার ধোবাউড়া উপজেলার হরিণধরা গ্রামে। তিনি উপজেলার জামিরদিয়া এলাকায় ভাড়া থাকেন। এ ছাড়া অন্যদের বাড়ি ভালুকা উপজেলায়। পুলিশ, পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানা যায়, গত ১৯ মার্চ বিকেলে ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর পূর্ব পাশে বিলাইজোরা খালের সেতুর পাশে থেকে একটি অর্ধগলিত নারীর অজ্ঞাত লা’শ উদ্ধার করে পুলিশ।

পরের দিন নূর হোসেন নামের এক ব্যক্তি লাশ দেখে শনাক্ত করেন, এটি তার মেয়ে লিপি আক্তার। নূর হোসেনের বাড়ি উপজেলার কংশেকুল গ্রামে। তিনি পরিবার নিয়ে জামিরদিয়া এলাকায় থাকেন। লিপি আক্তার পাশের শ্রীপুর উপজেলার জৈনা বাজার এলাকায় ‘এএ ইয়ার্ন’ নামের একটি কারখানায় চাকরি করতেন। গত ১৫ মার্চ লিপি আক্তার নিখোঁজ হন। ১৭ মার্চ গাজীপুরের শ্রীপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন লিপির বাবা নূর হোসেন। ২০ মার্চ (লিপির লাশ শনাক্তের দিন) নূর হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে ভালুকা মডেল থানায় একটি হ’ত্যা মা’মলা দায়ের করেন।

৬১ দিন পর গত বৃহস্পতিবার এই ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে রকিবুল ইসলাম, হৃদয় মিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে জয়নাল, মামুন ও রাব্বিকে গ্রেফতার করা হয়। বিজ্ঞ আদালতে রকিবুল ও হৃদয় ঘটনার সাথে জড়িত থাকার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভালুকা মডেল থানার এসআই ইকবাল হোসেন জানান, লিপি আক্তারের লাশ হওয়ার ঘটনা বিস্তারিত স্বীকার করেছেন রকিবুল ও হৃদয়। রকিবুলের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে লিপি আক্তারের। পরে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। এরপর লিপি বিয়ের জন্য চাপ দেয় রকিবুলকে।

কিন্তু রকিবুল তাতে রাজি না হয়ে কিছুটা যোগাযোগ কমিয়ে দেয় লিপির সাথে। গত ১৪ মার্চ রকিবুল আরো কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে লিপিকে গণধ’র্ষণের পরিকল্পনা করে। সেই মোতাবেক ১৫ মার্চ রাত ১০টায় লিপির কারখানা ছুটি শেষে ভালুকা উপজেলার কড়ুইতলা মোড়ের উত্তর পাশে একটি গভীর বাগানে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সেখানে লিপির হাত বেঁধে রাব্বি, মামুন, রকিবুল, আশিক, হৃদয় ও জয়নাল ধ’র্ষণ করে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই লিপির মৃত্যু হয়।

পরের দিন ১৬ মার্চ রাত ১০টায় লিপির লা’শ ওই স্থানে ফেলে রেখে যায় এই আসামিরা। এ বিষয়ে মামলা তদারকি কর্মকর্তা ভালুকা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খোরশেদ আলম বলেন, ‘লিপি হ’ত্যামা’মলাটি ছিল ক্লো-লেস। রহস্য উদঘাটনে বেশ বেগ পেতে হতে হয়েছে। কারণ, ওই মেয়ের পরিবারের অন্য সদস্যরা বাক-প্রতিবন্ধী। তারা কোনো ধরণের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে পারেনি। মামলার রহস্য উদঘাটন করতে এক দিকে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়েছে। অন্যদিকে তদন্ত কর্মকর্তাকে ছদ্মবেশ ধারণ করে আসামিদেরকে শনাক্ত করতে হয়েছে।’

Check Also

ইতালিতে হিজাব পরায় বাংলাদেশি নারীকে হেনস্তা, প্রতিবাদে বিক্ষোভ

সম্প্রতি ইতালিতে হিজাব পড়ায় এক বাংলাদেশি নারীকে হেনস্তার প্রতিবাদে দেশটিতে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মুসলিম। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *