Breaking News

নতুন বউকে রাস্তায় রেখে ইয়াবা ডেলিভারিতে গিয়ে ধরা রানা

বিদ্যুৎস্পৃষ্টে রানা হাওলাদারের বাম হাতের নিচের অংশ কেটে ফেলা হয়। এরপর প্লাস্টিকের হাত লাগানো হয়। ওই হাতের ভেতরে কৌশলে রানা ইয়াবা পাচার করতেন। প্রায় আট বছর ধরে এই কাজ করছিলেন তিনি। তবে সদ্য বিয়ে করা বউকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়ে রাস্তার মোড়ে বসিয়ে রেখে ইয়াবা ডেলিভারি দিতে গিয়ে রানা ধরা পড়লেন গোয়েন্দা জালে।

বুধবার সকালে তেজগাঁও পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন তেজগাঁও বিভাগের তেজগাঁও জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার রুবাইয়াত জামান, শিল্পাঞ্চল জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. হাফিজ আল ফারুক।

ডিসি আজিমুল হক বলেন, এটি একটি নতুন কৌশল। আপনারা জানেন এরকম লোক মানুষের কাছে এমনিই সিমপ্যাথি পায়। রানা সেই সুযোগটিকে কাজে লাগিয়েছে। গতকাল রাতে আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হাতিরঝিল থানার পশ্চিম রামপুরার ওমর আলী লেন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করি। রানা জানিয়েছে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে তার বাম হাতের নিচের অংশ কেটে ফেলেন চিকিৎসক। সে দীর্ঘ সাত-আট বছর ধরে ইয়াবা কারবারের সঙ্গে জড়িত। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা (মামলা নং-৪৮) দায়ের করা হয়েছে।

ডিসি বলেন, রানার বিরুদ্ধে শরীয়তপুর জেলার সখীপুর থানায় দুটি মাদক মামলাসহ মোট তিনটি মামলা রয়েছে। সে পেশায় একজন অটোরিকশা চালক। অটোরিকশা চালালেও তার মূল পেশা ইয়াবা কারবার। মূলত অটোরিকশা চালিয়ে সে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে যাত্রী আনা নেওয়ার পাশাপাশি ইয়াবা সরবরাহ করে। বাম হাতে প্লাস্টিকের কৃত্রিম হাত সংযুক্ত থাকায় তাকে তেমন কেউ সন্দেহের চোখে দেখেনি। উপরন্তু সে সবার সহানুভূতি পেয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন বিনোদন এলাকায় ঘুরতে গিয়ে সে এই মাদক বিক্রি করতো। ইয়াবাগুলো সে তার কৃত্রিম হাতের কনুইয়ের ভেতরে অভিনব কায়দায় নিল রঙের ক্ষুদ্র প্যাকেটে লুকিয়ে রাখতো। আমরা দীর্ঘদিন ধরে তাকে অনুসরণ করছিলাম।

রানা বেশ কিছুদিন ধরে মিরপুর এলাকায় থাকে। গত সাত দিন আগে সে বিয়ে করেছে। এটি তার দ্বিতীয় বিয়ে। প্রথম স্ত্রী তাকে ডিভোর্স দিয়েছে। গতকাল সে মিরপুর থেকে বাসে করে নতুন বউকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিল। রামপুরা এলাকায় এসে বাস থেকে নেমে বউকে বসতে বলে ইয়াবা ডেলিভারি দিতে গিয়ে হাতিরঝিল থানা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয় সে। তার সঙ্গে এ কাজে আরো কেউ জড়িত আছে কি না সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সাদা ইয়াবার বিষয় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মাদকের ভিন্নতা আনতে এবং চাহিদার কারণেই তারা এটি করতেন।

এই ধরনের মাদক হাত বদল চক্রের আরও সদস্য রয়েছে কি না জানতে চাইলে ডিসি বলেন, নিঃসন্দেহে এমন চক্রের একজন নয়। আরও অনেকজন আছে। আমরা একজনকে ধরে শুরু করেছি। আমাদের কাছে তথ্যটি অনেক দিন ধরেই ছিলো। আমরা কাজ করছি। সামনে আরও অনেক লোক জড়িত বলে প্রাথমিক তথ্য পেয়েছি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে অন্যন্য তথ্য উপাত্ত কাজে লাগিয়ে আমরা কাজ করছি। শারীরিক প্রতিবন্ধীদের প্রতি আমাদের সবারই একটি সফট দৃষ্টি রয়েছে। কিন্তু তারা এটি কাজে লাগিয়ে এ ধরনের অপরাধ করছে এবং এটা ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। তারা বিশেষ করে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে তারা মাদক হাত বদল করত। ছোট মাদক হওয়া ভিক্ষা বা হ্যান্ডশেক করার ছলে মাদক হাতবদল করত। সে মূলত খুচরা বিক্রেতা।

এই চক্রের পেছনে কারা জড়িত জানতে চাইলে ডিসি বলেন, তারা কাটআউট পদ্ধতিতে মাদক হাতবদল করত। তারা একে অন্যকে চেনেন না। তাদের শনাক্ত করা কঠিন। এর আগেও আমরা অনেক চক্র ধরেছি। আমরা চেষ্টা করছি চক্রের সবাইকে গ্রেপ্তার করতে।

সাদা ইয়াবার বিষয়ে জানতে চাইলে আজিমুল হক বলেন, মাদকের বিভিন্ন ডায়মেনশন থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় এখন সাদা মাদক তৈরি করছে। কেমোফ্লেক্স করতেই তারা এটি করছে। যারা এটার প্রতিআশক্ত তাদের কাছে নতুনত্ব আনার জন্যই করা হচ্ছে।

Check Also

কন্যার ছিন্নভিন্ন দেহ কুড়াচ্ছিলেন মা

অনেক সাধনা। দীর্ঘ প্রতীক্ষা। সংসার পাতার আট বছর পর গিয়াস-রাবেয়া দম্পতির ঘরে জ্যোতি ছড়ায় রায়সা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *