আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবু বকর ছিদ্দিক দাবি করেছেন, বড় অঙ্কের লেনদেন ছাড়াও নেতাদের দ্বৈত ভূমিকার কারণেই পঞ্চগড় জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী তোয়বুর রহমান পরাজিত হয়েছেন।
আজ শুক্রবার সকালে পঞ্চগড় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাকর্মীসহ গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।এ সময় তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনের ফলাফল দেখে জেলার সচেতন মহল বিস্মিত হয়েছে।
এই নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পরাজয় হয়েছে মূলত দলীয় নেতাদের কারণেই। নির্বাচনে তাদের ভূমিকা কী ছিল তা দিনের আলোর মতো সবার কাছে স্পষ্ট। তারা দিনে আওয়ামী লীগ আর রাতে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল হান্নান শেখের জন্য কাজ করেছেন। ‘
পঞ্চগড়ে এখন শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ চলে না, চলে সুজন লীগ উল্লেখ করে আবু বকর ছিদ্দিক বলেন, ‘জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন ও সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট এবং তাদের অনুসারীরা এই নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীকে পরাজিত করতে কাজ করেছে। ‘
তিনি বলেন, ‘এর আগে আমাকে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। সে সময়ও তারা একইভাবে আমার বিরুদ্ধে কাজ করে আমাকে পরাজিত করেছে। দলের অনেক নেতাকর্মী তাদের ভূমিকায় স্তব্ধ হয়ে গেছে। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মূল নেতারা কেউ মাঠে ছিল না। নির্বাচনে কেবল আবু তোয়বুর রহমান পরাজিত হননি পরাজিত হয়েছে আওয়ামী লীগ। ‘
ছিদ্দিক বলেন, ‘জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী আবু তোয়বুর রহমান ৫০ বছর ধরে দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। কখনো তিনি দলের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেননি। ‘
অনেক নির্বাচনে আবু তোয়বুর রহমান সফলতার সঙ্গে পরিচালনা কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন উল্লেখ করে ছিদ্দিক বলেন, ‘দলকে ভালোবেসে দল যাকেই যখন মনোনয়ন দিয়েছে তার পক্ষেই কাজ করেছেন তিনি। আজ তার নির্বাচনেই দলীয় নেতারা উল্টো ভূমিকা রেখেছেন। ‘
তিনি আরো বলেন, ‘এবার জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে আবারও সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সুজন ও সম্রাটকে দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্তটা ছিল ভুল। তারা কখনো আওয়ামী লীগের জন্য কাজ করেনি। তারা নিজের ও নিজের স্বজনদের ভাগ্য পরিবর্তন করেছে। দলের উন্নয়ন করেনি। তাদেরকে দলের পদ থেকে সরিয়ে যোগ্যদের না আনলে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয় পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। ‘
দলীয় বিভক্তি চরম আকার ধারণ করেছে উল্লেখ করে ছিদ্দিক বলেন, ‘দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে আগামীতে আওয়ামী লীগের রাজপথে দাঁড়ানোর শক্তি থাকবে না। তাই আমরা দলের প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ দলের নীতিনির্ধারকদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। ‘
উল্লেখ্য, গত ১৭ অক্টোবর পঞ্চগড় জেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান পদে পঞ্চগড় চেম্বারের সভাপতি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল হান্নান শেখ নির্বাচিত হন। তিনি চশমা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২৮৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী আবু তোয়বুর রহমান মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২৩১ ভোট।