গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাশিমপুরের পানিশাইল জিরানী এলাকায় অকোটেক্স গ্রুপের মালিকের মেয়ের বিয়ের দাওয়াতি মেহমান কারখানার চার হাজার শ্রমিক।
শনিবার (৮ অক্টোবর) পানিশাইল জিরানীর অকোটেক্স লিঃ এবং ইয়াসিন নিটিং ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ এর ভেতরে এক জমকালো অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয় ওই প্রতিষ্ঠানের চার হাজার শ্রমিক। দিনটিতে ছিল না কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভেদাভেদ।
বিয়ের কনে অকোটেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জি: আব্দুস সোবহানের বড় কন্যা নাবিলা তাসনিম এবং বর বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক মিনহাজ আহমেদ খান (নাফিজ)।
কারখানার শ্রমিকরা জানান, তাদের কারখানা মালিকের এমন আয়োজনে সবাই অনেক খুশি। অনেকে আবার পরিবার নিয়ে এসেছে দাওয়াত খেতে। অনুষ্ঠান ঘিরে শ্রমিক এবং তাদের পরিবারের মধ্যে বিরাজ করছিল উৎসবের আমেজ। সকাল থেকে সবাই রঙ্গিন কাপড় পড়ে কারখানায় প্রবেশ করে। যা ছিল অন্যান্যে দিনের তুলনায় অনেক ব্যতিক্রম। সকাল ১০টা থেকে শ্রমিকদের নিজস্ব পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হয় নাচ-গান। আবার অনেকে দিনটিকে স্মরণীয় করতে ছবি তোলায় ছিল ব্যস্ত। সবমিলিয়ে শ্রমিকরা কর্মজীবনের একটি ব্যতিক্রমী দিন পার করেছেন। এ ঘটনায় এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছে।
অকোটেক্স গ্রুপের জিএম এডমিন মেজর মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান (অব) জানান, গত তিনদিন আগে থেকেই কারখানা কমপ্লেক্সে ভেতরে শুরু হয় সাজসজ্জার কাজ। শনিবার ছিল বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান। এ উপলক্ষে কারখানা কমপ্লেক্সের প্রবেশদ্বার থেকে ভেতর পর্যন্ত করা হয় ছয় গেইট। এছাড়া পুরো কমপ্লেক্স জুড়েই ছিল লাইটিংসহ নানা রকমের সাজ-সজ্জা। কয়েকটি পর্বে সাজানো হয় অনুষ্ঠান মালা। লাল গালিচা এবং ফুল ছিটিয়ে বর-কনে বরন করে শ্রমিকরা। বর-কনেও সব শ্রমিকদের সঙ্গে আনন্দে মেতে উঠে। এ সময় সবাই বর-কনের সঙ্গে ছবি তুলেন।
কমপ্লেক্সের ভেতরেই মঞ্চ করে আয়োজন করা হয় ওপেন কনসার্টের। কারখানার সব নারী ও পুরুষ শ্রমিকদের মধ্যে ছিল উৎসবের আমেজ। নারী শ্রমিকরা একই রকমের শাড়ি এবং পুরুষ শ্রমিকরা একই রকমের পাঞ্জাবি পাজামা পড়ে ছিলেন অনুষ্ঠানের দায়িত্বে। মঞ্চে শ্রমিকদের মধ্যে ছিল গ্রুপ নাচ এবং একক গান। অনুষ্ঠানে শুধু পোশাকে নয়, খাবারেও ছিল আভিজাত্য। কাচ্চি বিরিয়ানি, চিকেন রোস্ট, মিষ্টি, ডিম, ফলের জুসসহ বাদ যায়নি কোমল পানিও। খাবার খাওয়ানো হয় অন্য সব অতিথিদের সঙ্গে।
দুপুরের খাবার ব্যবস্থা করা হয় আটতলা ভবনের ছাদে। বিকেলে ছাদের মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় সংস্কৃতি অনুষ্ঠান। শেষে মালিক-শ্রমিক ছিল না কোনো দূরত্ব। আনন্দ-উল্লাসে সবাই হয়ে পড়েছিলেন একাকার। বিত্ত-বৈভব ছেড়ে অন্তর থেকে নিজ কারখানার শ্রমিকদের ভালোবেসেই এমনটা করেছেন অকোটেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জি: আব্দুস সোবহান।