Breaking News

সেই বারে যেতেন উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তারাও

রাজধানীর উত্তরার-১৩ নম্বর সেক্টরের গরীবে নেওয়াজ রোডে অবস্থিত ‘কিংফিশার রেস্টুরেন্ট’ নামে কথিত একটি বারে অভিযান চালিয়ে বিদেশি প্রায় ৫০০ বোতল মদ ও ৬ হাজার ক্যান বিয়ার জব্দ করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় কথিত বারের ম্যানেজারসহ ৩৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

ডিবি জানায়, এই বারে প্রতিদিন যাতায়াত ছিল সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের। তাদের মধ্যে রয়েছে সরকারি উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা, আইনজীবী, ডাক্তারসহ বিভিন্ন পেশার নারী-পুরুষ। অভিযান পরিচালনার সময়ও বিনা লাইসেন্সে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সেখানে বসে মদ্যপান করছিলেন।

কিংফিশার রেস্টুরেন্ট নামে কথিত বারটি পরিচালনা করছেন মো. মুক্তার হোসেন নামে এক ব্যক্তি। তিনি একটি লাইসেন্সর মাধ্যমে প্রায় ৫টি বার পরিচালনা করছেন। অবৈধভাবে বিদেশি মদ ও বিয়ার এনে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করতেন তিনি।

শুক্রবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর ১৩ নম্বর সেক্টরের গরীবে নেওয়াজ এভিনিউ রোডের একটি বাড়িতে শত শত মানুষ গান বাজনার নামে ডিজে পার্টি করছে এবং সেখানে প্রচুর পরিমাণ মদ বিক্রি হচ্ছে বলে আমাদের কাছে তথ্য আসে। এর আগেও উত্তরার সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তি এ বিষয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ করেন।

সেই তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ে রাত ৯টার দিকে ডিবি উত্তরার সব টিম ওই বাড়িতে যায়। তারা সেখানে গিয়ে ভয়াবহ অবস্থা দেখতে পান। সেখানে প্রচুর পরিমাণে বিদেশি মদ ও বিয়ার মজুদ পাওয়া যায়।

পরে ডিবি সদস্যরা ৫০০ দামি বিদেশি মদের বোতল ও প্রায় ৬ হাজার ক্যান বিয়ার জব্দ করেন। এসব মদ ও বিয়ার তারা কীভাবে দেশে আনা হয়েছে জানতে চাইলে কর্তৃপক্ষ কোনো তথ্যই জানাতে পারেনি। কাগজপত্রের জন্য রাত ২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করা হয়। কিন্তু তারা কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় সেখান ৩৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

পরে তাদের নামে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। সে মামলায় গ্রেফতারকৃতদের আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ড আবেদন করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, কিংফিশার রেস্টুরেন্ট নামে ওই ভবনে এসব কার্যক্রম চলতো। কথিত ওই বারের মালিক মুক্তার হোসেন নামের এক ব্যক্তি। তার আরও বেশ কয়েকটি বার রয়েছে রাজধানীসহ নারায়ণগঞ্জে।

গ্রেফতার বারের ম্যানেজার আমাদের বলেছেন, মিরপুর, গুলশান ও নারায়ণগঞ্জে মোট ৫টি বার চালান মুক্তার। সেগুলো একই লাইসেন্সের কিনা সেটা আমরা জানি না।

মুক্তার ২০০৮ সালের দিকে বারিধারায় এভিনিউ নামে একটি রেস্টুরেন্টে ওয়েটার হিসেবে কাজ করতেন। লেকভিউ নামে গুলশান-২-এ একটি রেস্টুরেন্টে ছিল, সেখানেও তিনি কাজ করতেন ওয়েটার হিসেবে। ওয়েটার থেকে মুক্তার এখন শতকোটি টাকার মালিক। তার যুক্তরাষ্ট্রের বাড়ি-গাড়ি আছে। সেখানে তার স্ত্রী ও সন্তান বসবাস করে।

মামলায় প্রতিষ্ঠানটির কাকে কাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মালিক ও ম্যানেজারসহ অনেককে মামলায় আসামি করা হয়েছে। গ্রেফতার ৩৫ জনের মধ্যে কয় জন প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট এ বিষয়গুলো আমরা যাচাই-বাছাই করছি।

এই কর্মকাণ্ডের সঙ্গে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কোনো কোরিয়ান নাগরিক জড়িত কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।

উত্তরার কথিত এই বারটিতে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদেরও যাতায়াত ছিল। তাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে কি-না, এমন প্রশ্নের ডিবি প্রধান বলেন, সেখানে কাদের যাতায়াত ছিল, বিষয়টি আমরা তদন্ত করব।

Check Also

আ.লীগ নেতার মারধরে ছাত্রলীগ নেতা হাসপাতালে 

লক্ষ্মীপুরে আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কাশেম জিহাদি অনুসারীদের নিয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রাকিব ইমামকে মারধর …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *