রাস্তায় পাঁচ লাখ টাকা কুড়িয়ে পেয়েছিলেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বাসিন্দা সৌরভ হোসেন। টাকার মালিককে খুঁজে পেতে মাইকিংও করেছিলেন। তবে মালিককে খুঁজে না পেয়ে তিন লাখ টাকা একজন অন্ধ হাফেজের চিকিৎসায় দান করেছেন তিনি।
সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঠাকুরগাঁও পৌরশহরে মুন্সিরহাট মহল্লার অন্ধ হাফেজ মো. হৃদয়ের চোখের চিকিৎসায় তিন লাখ টাকার একটি চেক তার হাতে তুলে দেওয়া হয়।বাকি দুই লাখ টাকা বন্ধুর বাবার চিকিৎসা ও স্থানীয় কিছু অসহায় মানুষকে দেবেন বলে জানিয়েছেন সৌরভ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু তাহের মো. শামসুজ্জামান, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান বাবু, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সন্তোষ কুমার আগারওয়ালা, ঠাকুরগাঁও প্রেস ক্লাবের সভাপতি মনসুর আলী প্রমুখ।সৌরভ হোসেন বলেন, ‘আমি জানতে পারি এই হাফেজ এই অবস্থায় ২৮ পাড়া কোরআন মুখস্ত করেছেন। মসজিদে আজান দেন। চিকিৎসক বলেছেন তার চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার দরকার। অনেক দিন ধরে বিভিন্ন জনের কাছে সহায়তা চেয়েছেন। কারও কাছে পেয়েছেন কারও কাছে পাননি। তিনি চোখে দেখতে চান। তাই আমি তাকে টাকাটা দিয়েছি।’
অন্ধ হাফেজ হৃদয় বলেন, ‘এমন খুশি আগে কখনো হইনি। টাকাটা আমার দরকার ছিল। আমার জন্য দোয়া করবেন যেন আমি চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ চোখে পৃথিবীর আলো দেখতে পারি।’
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মো. সামসুজ্জামান বলেন, নিঃসন্দেহে এটি একটি ভালো উদ্যোগ। হৃদয় যেন সুস্থ হয়ে পৃথিবীর সৌন্দর্য দেখতে পান সে দোয়া থাকবে।
গত ১৮ আগস্ট ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় মহাসড়কের ধারে একটি ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখেন সৌরভ। কোনো পথচারীর প্রয়োজনীয় ব্যাগ হতে পারে ভেবে সেটি সঙ্গে নেন তিনি। পরে ব্যাগ খুললে সেখানে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা দেখতে পান। তাই টাকার সন্ধানে কেউ খুঁজতে আসবেন বা মাইকিং করতে পারেন ভেবে অপেক্ষায় ছিলেন সৌরভ। কিন্তু ব্যাগ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টা পার হলেও পাওয়া যায়নি সেই টাকার মালিক। তাই মালিকের সন্ধানে মাইকিং করার ব্যবস্থা করেন তিনি। তবে এক মাসেও মালিককে না পেয়ে টাকাগুলো দান করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
সৌরভ ঠাকুরগাঁওয়ের শান্তিনগর এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে। তিনি পেশায় একজন ক্রোকারিজ ব্যবসায়ী।