Breaking News

ওরা খ্রিস্টান-কাফের, ওদের ধর আর মার’বলেই হিযবুত তাওহীদ সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা

আব্দুল লতিফ রঞ্জু, পাবনা প্রতিনিধি: পাবনা সদর উপজেলায় সুজন হোসেন (৩০) নামে এক হিযবুত তওহীদ সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১০ জন। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। এঘটনায় ৫-৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।বুধবার (২৪ আগস্ট) ভোরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এর আগে মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) রাতে উপজেলার চর ঘোষপুর নফসারের মোড়ের হিযবুত তাওহীদের কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত সুজন সদর উপজেলা হেমায়েতপুর ইউনিয়নের চর ঘোষপুর গ্রামের মধ্যপড়া এলাকার মৃত আনিছুর মন্ডলের ছেলে। সে হিযবুত তাওহীদ পাবনা জেলা শাখার সদস্য এবং পেশায় ওয়ার্কশপ মিস্ত্রী ছিলেন। ঘরে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রয়েছে।প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, নফসারের মোড়ে কার্যলয় করে তারা হিজবুত তাওহীদের কার্যক্রম চালাচ্ছিল। তাদের মতাদর্শ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই এলাকাবাসীদের সঙ্গে তাদের বিরোধ চলছিল। মঙ্গলবার ৮টার দিকে ওই ক্লাবের সঙ্গে একটি সেলুনের দোকানে হিযবুত তাওহীদের এক সদস্যের চুল-দাঁড়ি টাকা নিয়ে তর্ক হয়। আধা ঘণ্টার পর স্থানীয় প্রায় শতাধিক লোক লাঠিসোঠা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের কার্যালয়ে হামলা করে। হিযবুত তাওহীদের সদস্যের এলোপাথারি কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে আহতদের পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে সুজনের অবস্থার অবনতি হয়। পরে তাকে রামেক হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।

নিহত সুজনের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী শাহানা খাতুন ও ভাই মোমেনুল ইসলাম বলেন, ‘হিযবুত তাওহীদের মতাদর্শ নিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে সুজনের দ্বন্দ্ব ছিল। আমরা তাকে অনেক বুঝিয়েছি কিন্তু সে শোনেনি। গতকাল রাতে চুল-দাঁড়ি কাটা নিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে তর্ক হয়। পরে আমাদের এলাকার শেখ গোষ্ঠীর লোকজন লাঠিসোঠা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের কার্যালয়ে হামলা করে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে।’এবিষয়ে হেযবুত তওহীদের পাবনা জেলা শাখার আমির সেলিম শেখ বলেন, ‘ঘোষপুর ইউনিট কার্যালয়ে দলের সদস্যদের নিয়ে আমি দৈনন্দিন কার্যক্রম চালাচ্ছিলাম। এসময হঠাৎ করে প্রচুর মানুষ আমাদের কার্যালয়ের সামনে এসে চিৎকার করে বলে- ‘ওরা খ্রিস্টান-কাফের, ওদের ধর আর মার’। এসময় আমরা কার্যালয়ের ভেতর থেকে সামনে দাঁড়ালেই কোপানো শুরু হয়।’

এবিষয়ে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মাসুদ আলম বলেন, ‘ওইখানে হিযবুত তাওহীদের কার্যালয় আছে। সেখানে তাদের সঙ্গে এলাকাবাসীর বিরোধ ছিল। গতকাল সম্ভবত চুল-দাঁড়ি কাটা নিয়ে হিযবুত তাওহীদের একজন সদস্য একজন এলাকাবাসীকে থাপ্পর মারে। পরে স্থানীয় কিছু লোক দলবদ্ধ হয়ে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে।’

এদিকে এঘটনার মূলহোতা আলালসহ ৫-৬ জনকে গ্রেফতার করা হযেছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলেও জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম।

Check Also

সরকারের দেওয়া আশ্রায়ণের ঘর নিয়ে বিপাকে ভিক্ষুকপুত্র

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর পৌরসভায় সরকারের আশ্রায়ণ প্রকল্পের (খ শ্রেণি) ঘর পেয়েও সেখানে বসবাস করতে পারছেন না …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *