সাত বছরের শিশুপুত্রের সামনে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার এক নারী। তিনি দুই সন্তানের মা। চোখের সামনে এমন নৃশংস ঘটনা দেখেছে শিশুটি, তিন দিন পেরিয়ে গেছে, এখনো ভয়ে সিঁটিয়ে থাকছে শিশুটি। আর লজ্জায় সন্তানের সামনে দাঁড়াতে পারছেন না ধর্ষণের শিকার হওয়া মা।
আজ রোববার সকালে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা পাড়িয়া ইউনিয়নের জিল্লুর পাড়া গ্রামে ধর্ষণের শিকার ওই নারীর বাড়িতে গিয়ে জানা যায় ঘটনার বিস্তারিত। ধর্ষণ ও মারপিটের শিকার ওই নারীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় আজ দুপুরে তাঁকে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ছেলেকে সঙ্গে করে শ্বশুরবাড়ি থেকে বোনের বাড়িতে যাচ্ছিলেন ওই নারী। হরিপুর উপজেলার বকুয়া ইউনিয়নের কামারপুকুর অটো স্ট্যান্ড থেকে তাঁকে পাঁচজন অপহরণ করে চাপধা বাজারের উত্তরপাশে একটি আম বাগানে নিয়ে যায়। এরপর ছেলের গলায় ছুরি ধরে নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। পরে নারীকে মারধর করে সন্তানসহ পাশের রাস্তায় ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে।
এ সময় স্থানীয় কয়েজন ফজলুর রহমান নামে অভিযুক্ত একজনকে আটক করে হরিপুর থানায় খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মা ও শিশুটিকে উদ্ধার করে। ফজলুর রহমানকে থানায় নিয়ে যায়। রাতেই অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরও দুই জনকে আটক করে পুলিশ।
গতকাল শনিবার এ ঘটনায় হরিপুর থানায় পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী নারী। ওই দিনই পুলিশ আটক তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন— হরিপুর উপজেলার বকুয়া ইউনিয়নের চাপধা হাটপুকুর গ্রামের সলেমান আলীর ছেলে ফজলুর রহমান (২০), চাপধা পিপলা গ্রামের করিমুল ইসলামের ছেলে রিসাদ (১৯), একই এলাকার গুচ্ছগ্রামের শাহজাহান আলীর ছেলে আকাশ (২০)। পলাতক অপর দুই আসামির নাম রকিম ও লস্কর।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হরিপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘অভিযুক্ত পাঁচ আসামির মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে ২২ ধারায় জবানবন্দিতে তাঁরা নিজেদের অপরাধ স্বীকার করেন। আদালতের নির্দেশক্রমে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
ওই নারীর বর্তমান শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও ৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার রকিবুল আলম বলেন, ‘ভুক্তভোগী ওই নারী পরীক্ষার জন্য এসেছিলেন। নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়া হবে।’