আদালতে বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান সোহেল এফ রহমান এবং ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে ১৯৯৬ সালের শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারির আলোচিত দুই মামলা বাতিলের প্রতিবাদে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দুর্নীতি প্রতিরোধ আন্দোলন নামে একটি সংগঠন। তবে সংগঠনটির কোন সরকারি সংস্থার নিবন্ধন নেই। দাপ্তরিক অফিসের ঠিকানা হিসেবে বলা হয়েছে ৩৭১ ফ্রি স্ট্রিটস্কুল রোড, কলাবাগান।
সোমবার সংবাদ মাধমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি বলছে, কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করবেন দূর্নীতি প্রতিরোধ আন্দোলনের আহ্বায়ক হারুন অর রশিদ খান।বক্তব্য রাখবেন, দূর্নীতি প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতৃরা, নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক মো. শামসুদ্দীন, ডেমোক্রেটিক লীগের সভাপতি সাইফুদ্দিন মনি, দার্শনিক আবু মহি মুসা, সিএলএনবির চেয়ারম্যান হারুনূর রশীদ, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সভাপতি ডা. সামছুল আলম, বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিদ্দীন আহমেদ, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতা মো. হানিফ প্রমুখ।
দুই মামলায় আসামি ছিলেন বেক্সিমকো গ্রুপের দুই প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মা ও শাইনপুকুর হোল্ডিংস, বেক্সিমকো ফার্মার চেয়ারম্যান সোহেল এফ রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রয়াত ডি এইচ খান।
সালমান এফ রহমান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি খাত উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্বে রয়েছেন।
১৯৯৬ সালের কৃত্রিমভাবে শেয়ারের দাম বাড়িয়ে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ১৫টি প্রতিষ্ঠান ও ৩৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন।
পুঁজিবাজার সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তিতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করার পর এই দুটি মামলা মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালত থেকে ট্রাইব্যুনালে চলে যায়।
এর আগেই মামলা দুটি বাতিলে উচ্চ আদালতে আসে মামলার বিবাদী প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিরা। কেন মামলা দুটি বাতিল করা হবে না, মর্মে রুল দেয় আদালত। পাশাপাশি স্থগিতাদেশও দেয়া হয়।
দীর্ঘদিন রুলটি শুনানির অপেক্ষায় থেমে থাকার পর চূড়ান্ত শুনানি শেষে আদালত মামলা দুটি বাতিল করে দেয়।
রায়ে দুই মামলার কোনোটিতে আসামি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো প্রাথমিক উপাদান পাওয়া যায়নি বলা হয়ে।
এতে আরো বলা হয়, তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ কেবল অস্পষ্টই নয়, কোনোভাবে সংজ্ঞায়িতও করা হয়নি। ফৌজদারি বিচারে অভিযোগ অবশ্যই সুনির্দিষ্ট হতে হবে।
১৯৯৬ সালের শেয়ার কেলেঙ্কারির ওই ঘটনায় ২০১৫ সালের জুনে ট্রাইব্যুনাল গঠনের দুই মাসের মাথায় প্রথম রায়ে চিক টেক্সটাইলের দুই কর্মকর্তার সাজা হয়।
কৃত্রিমভাবে শেয়ারের দর বাড়ানোর দায়ে ওই কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. মাকসুদুর রসুল ও পরিচালক ইফতেখার মোহাম্মদকে চার বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয় আদালত। সেই সঙ্গে ৩০ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।
৯৬-এর শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির ঘটনায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অর্থনীতির অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম চৌধুরীর তদন্ত প্রতিবেদনে বেক্সিমকো ফার্মা ও শাইনপুকুর হোল্ডিংসের বিরুদ্ধে বাজারে কারসাজি করে দর তোলা ও নামানোর অভিযোগ বেরিয়ে আসে।
এদিকে রায় প্রকাশের খবরটি গণমাধ্যমে আসার পর মামলার বাদী বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বলছে, তারা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে।